শুল্ক ফাঁকি ও অর্থপাচারের অভিযোগে ইউএনডিপির বাংলাদেশের সাবেক কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন প্রিসনারের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সুপারিশ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। দীর্ঘ তদন্ত শেষে শুল্ক গোয়েন্দারা তাকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়।

শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, প্রিসনার বাংলাদেশে ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর থাকা অবস্থায় শুল্ক মুক্ত সুবিধায় নেওয়া গাড়ি অবৈধভাবে অন্যের কাছে হস্তান্তর করে এবং অনৈতিকভাবে আর্থিক লেনদেন করেন। শুল্ক গোয়েন্দারা তদন্ত প্রতিবেদনে তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই সুপারিশ করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে শুল্ক ও অর্থপাচার আইনে মামলা করা হবে।

মইনুল খান জানান, ব্যক্তিগত সুবিধা নেওয়ার জন্য শুল্কমুক্ত গাড়িটির বিক্রি এবং লেনদেনের অর্থ বাংলাদেশের বাইরে অবস্থিত বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়। তার এই কার্যক্রম শুল্ক আইন ও অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক অধিদফতরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা ড. মইনুল খান আরও জানান, নিউ ইয়র্কে ইউএনডিপির সদর দফতরে তারা প্রিসনারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এবং মামলা সংক্রান্ত সব ধরনের নথিপত্র পাঠাবেন। একইসঙ্গে ইউএনডিপিকে তাদের নিজস্ব নীতি অনুযায়ী প্রিসনারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হবে।

প্রিসনারের ব্যবহৃত শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা গাড়িটি ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর উত্তরার একটি বাড়ি থেকে আটক করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। এরপর অধিদফতরের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ সফিউর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তারা বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। তদন্ত প্রতিবেদনের কপি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠানো হয়েছে।

প্রিসনার বর্তমানে উজবেকিস্তানে ইউএনডিপির প্রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ইউএনডিপির ঢাকা মিশনে থাকার সময়ে কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এমন দায়িত্বশীল পদে থেকে এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ করা মোটেও বাঞ্ছনীয় নয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রিসনারের বিরুদ্ধে অর্থপাচার প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী থানায় ফৌজদারি মামলা দায়ের করে শুল্ক গোয়েন্দাদের দিয়ে মামলার তদন্ত কার্যক্রম চালানো যেতে পারে।