জাগো নিউজ:

৫৮টি দল নিয়ে রাজনৈতিক জোটের ঘোষণা দিলেও আগামী সংসদ নির্বাচন এককভাবে করতে দলের শীর্ষ নেতাদের সাড়া পাচ্ছেন না জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।

জাতীয় সংসদের বিরোধীদলী দল হিসেবে থাকা জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা আবারও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আসন ভাগাভাগি করে নির্বাচনের যাবার পক্ষে মতামত দিচ্ছেন।

তারা পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদকে এমন কথাও বলছেন, ‘এককভাবে নির্বাচন করলে আপনি (এরশাদ) ছাড়া পাস করার মতো কোনো প্রার্থী দলে নেই।’

জাতীয় পার্টির নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৫৮টি দল নিয়ে এরশাদের নতুন জোট গঠনের প্রক্রিয়াটি রাজনীতিতে একটি চমক। এছাড়া ছোট ছোট যে দলগুলো নিয়ে এরশাদ জোট করছেন, মূলত দলগুলো যাতে বিএনপির সঙ্গে জোট না বাঁধতে পারে। এটা রাজনৈতিক কৌশলের অংশ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির নির্বাচনের মাধ্যমে ভবিষ্যতেও জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দল হিসেবেই থাকতে চায়।

সূত্র আরও জানায়, সম্প্রতি জাতীয় সংসদে সংসদীয় দলের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, ওই বৈঠকে জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এরশাদ এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বললেও দলের নেতারা এরশাদকে বলেছেন, এককভাবে নির্বাচনে যাওয়া হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কেউ কেউ বলেছেন, এককভাবে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে গেলে পার্টিও চেয়ারম্যান এরশাদ ছাড়া আর কেউ পাস করবে না। ১০/১৫জন প্রার্থী ছাড়া সবার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

তারা আরও বলেন, জাতীয় পার্টিও অবস্থাও আগের মত নেই। মাঠ পর্যায়ে কর্মী তো আগেই হারিয়ে গেছে, অনেক জেলা-উপজেলায় এখন নেতারাও হারিয়ে যাচ্ছেন। এসব বক্তব্যসহ অনেক নেতাই মাঠ পর্যায়ের চিত্র তুলে ধরেন।

এদিকে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এরশাদ নতুন জোট করলেও আওয়ামী লীগকে ছেড়ে যেতে পারবে না। ৫৮টি দল নিয়ে এরশাদের নতুন জোট গঠনের প্রক্রিয়াটি রাজনীতিতে একটি চমক।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি আলাদা জোট করলেও আমাদের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো অবনতি হবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় পার্টির এক মন্ত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ‘জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করতে চাইলে সে সিদ্ধান্তটা সঠিক হবে না। স্যার (এরশাদ) যেমনটা ভাবছেন তৃণমূলে পার্টির অবস্থা তেমন ভালো নয়। এ অবস্থায় এককভাবে নির্বাচনে গেলে স্যার (এরশাদ) ছাড়া অন্য প্রার্থীরা পাস করতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে।’

পার্টির চেয়ারম্যান মন্ত্রিসভা থেকে তাকে পদত্যাগ করতে বললে পদত্যাগ করবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ওই মন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু দল করি, দলের সিদ্ধান্ত অবশ্যই মানতে হবে। তিনি পদত্যাগ করতে বললে অবশ্যই পদত্যাগ করবো।’