বিশেষ প্রতিবেদক:

কক্সবাজার সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওতে দালাল ফিরোজের নেতৃত্বে চলছে বলীখেলার নামে জমজমাট জুয়ার আসর। তার নেতৃত্বে গত দেড়মাস ধরে বিভিন্নস্হানে বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার নামে জুয়ার জমজমাট আসর বসিয়ে যাচ্ছে জুয়াড়ীদের একাধিক সংঘবদ্ধ চক্র। প্রতিদিনই কোন না কোন এলাকায় ধারাবাহিক জুয়ার আসর বসিয়ে এরা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ঈদগাঁহ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দালাল ও অপরাধ জগতের রাজা হিসাবে পরিচিত পোকখালীর দালাল ফিরোজ জুয়াড়ী সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করছে বলে জানা গেছে। এসব জুয়ার মেলায় মাদকদ্রব্যের অবাধ বিকিকিনির পাশাপাশি পতিতা ও  অপরাধীদের মিলনমেলা ঘটছে বলে জানিয়েছেন স্হানীয়রা।
সূত্রে প্রকাশ, পোকখালীর রমজান মেম্বারের ছেলে দালাল ফিরোজের মাধ্যমে স্হানীয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রকে ম্যানেজ করে বিগত দেড়মাস যাবৎ এভাবে জুয়া-মাদক ও পতিতার অাসর বসানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্হানীয়রা।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় দেড়মাস আগে থেকেই বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার নামে জুয়াখেলা বসানো হচ্ছে বৃহত্তর ঈদগাঁওর বিভিন্ন স্হানে। পোকখালী, চৌফলদন্ডী, ভারুয়াখালী, ইসলামপুর, জালালাবাদ, ভারুয়াখালী ও ইসলামাবাদসহ বৃহত্তর ঈদগাঁওর বিভিন্ন ইউনিয়নে বলীখেলার নামে গত দেড়মাসে শতাধিক জুয়ার আসর সফলভাবে সম্পন্ন করেছে এ জুয়াড়ীচক্র। ক্ষেত্রবিশেষে একই দিনে একাধিকস্হানে আয়োজিত এসব জুয়ার আসর পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকায় অপর জুয়াড়ীদের কাছে ইজারা দিয়েছে তারা। সে হিসাবে শতাধিক জুয়ার আসর থেকে বিগত দেড়মাসে কম করে হলেও ৪/৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চিহ্নিত জুয়াড়ী সিন্ডিকেট। অনুসন্ধানে প্রকাশ, দেড়মাস আগে থেকে বিভিন্ন এলাকায় বলীখেলার নামে চলে আসছে রকমারী জুয়ার আসর। এর ধারাবাহিকতায় পোকখালী ইউনিয়নের নতুন বাজার  এলাকায় গত ২ মে মঙ্গলবার থেকে ৪ মে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত বলীখেলার নামে জুয়ার মেলায় জুয়ার আসর ইজারা হয় ছয় লাখ টাকায়। এরপর ৭ মে (শনিবার) থেকে আজ ৮ মে সোমবার পর্যন্ত ৩ দিনব্যাপী আবারো বিভিন্নস্হানে জুয়ার আসর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে ২৬ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল ইসলামপুর নতুন অফিস, পোকখালী মুসলিম বাজার, কালির ছড়া  ও চৌফলদন্ডীত অনুষ্ঠিত হয় তিনদিনের জুয়ার আসর। এখন কয়েকদিন পরে  চৌফলদন্ডী নতুন মহাল ও ইসলামাবাদে আবারো ৩ দিনের জুয়ার আসর বসানোর পাঁয়তারা শুরু করেছে জুয়াড়ীরা। বলীখেলার আড়ালে এসব জুয়াখেলায়  ছয়গুটি, তিনগুটি, বাঘ-গরু, হারুখেলা, তিনতাস, কেরকেরি ও কার্ডচয়েসসহ রকমারি নামের জুয়াখেলা বসিয়ে প্রতিদিন হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। জুয়ার টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে এলাকার বিপথগামী যুবকরা চুরি-ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়াচ্ছে। ফলে এলাকার আইনশৃংখলা পরিস্হিতির অবনতিসহ সামাজিক মূল্যবোধ নষ্ট হচ্ছে। এসব বলীখেলার আসর একটানা তিন চারদিন ধরে চলমান থাকায় জুয়াড়ীরা সদলবলে আবাসিকভাবে অবস্হান করে। এসময় তাদের মনোরঞ্জনের জন্য পতিতাও সররবরাহ করছে আয়েজকরা।  নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায়,  তথাকথিত বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার নামে এসব জুয়ার আসর বসানোর আগে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দালাল হিসাবে পরিচিত পোকখালীর ডাকাত ফিরোজের সাথে মোটা অংকের চুক্তি করতে হয়। প্রশাসন, সাংবাদিক, প্রেসক্লাব ও নেতা ম্যানেজ করার জন্য প্রতিটি জুয়ার আসরের জন্য অন্ততঃ দুইলাখ টাকা করে অগ্রীম নেয় দালাল ফিরোজ। তার গ্রীণ সিগন্যাল পেলেই শুরু হয় জুয়াখেলার মহা কারবার। পুলিশ তদন্তকেন্দ্র এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, জুয়াখেলার নিউজ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ না হওয়ার ব্যপারে সাংবাদিক ম্যানেজের দায়িত্ব পালন করেন দালাল ফিরোজ ও “মুল্লুকপুরা” নামে পরিচিত স্হানীয় ধান্ধাবাজ এক সাংবাদিক। প্রতিটি বলীখেলার জন্য দৈনিক হারে “বিশেষ বলীখেলা ডোনেশন” পৌঁছে দেয়া হয় ঈদগাঁও’র ৫ টি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের। ঈদগাঁওতে কর্মরত এক সাংবাদকর্মী জানান, তাই বিগত দেড়মাস ধরে বলীখেলার নামে ধারাবাহিক জুয়ার আসর চলে আসলেও স্হানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্হা নেয়নি অথবা কোন পত্রিকায় নিউজ আসেনি। দালাল ফিরোজ ফোন রিসিভ না করায় উপরোক্ত ব্যাপারে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তার বক্তব্য পাওয়া গেলে পরবর্তীতে গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করা হবে।