শাহেদ মিজান, সিবিএন:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এলে উন্নয়ন করি, বিএনপি ক্ষমতায় এসে হত্যাযজ্ঞ চালায়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে কক্সবাজার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের ৭ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। তাদের পরিবারগুলোর ওপর নির্যাতন করেছে। উখিয়ার বৌদ্ধমন্দিরে আগুন দিয়েছে। ওই সময় বিদ্যুৎকেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছে। কক্সবাজারের হিন্দুপল্লীর বাড়িঘরে আগুন দেওয়াসহ পালপাড়া, টাইমবাজারে সংখ্যালঘুদের দোকান, বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে ওই সময়। ২০ হাজার একর বনভূমি বিএনপি ক্যাডাররা দখল করে নিয়েছে।
শনিবার বিকালে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই শোক, সেই ব্যথা নিয়েও আমি আপনাদের কল্যাণে আপনাদের মাঝে ছুটে এসেছি।’
উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই দেশের উন্নয়ন হয়। আমরা গ্রামের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু করেছিলাম। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি সেটা বন্ধ করে দেয়। ওই সময় আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর মামলা হামলা চালায়। আমার ওপর গ্রেনেড হামলা করে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাই সৃষ্টি করে। আমরা জঙ্গিবাদ নির্মূল করি। তাই জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। তিনি বলেন, ‘আমরা ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে সার্বিক উন্নয়নে আবারও কাজ শুরু করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে সারাবিশ্ব থেকে পর্যটকরা আসেন। সে বিবেচনা করে আমরা এখানে বিমানের বোয়িং চলাচল শুরু করেছি। ভবিষ্যতে কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করা হবে। এ লক্ষ্যে প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়েছে।


আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। এর আগে তারা নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে ১৬৫জনকে হত্যা করেছে। পরিবহন খাতে ৫৫জন চালক হেলপারকে হত্যা করেছেল, ৫৮২স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে।’
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ জমি অধিগ্রহণ শেষ হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রাস্তা চারলেনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। মহেশখালী দ্বীপে চর জেগেছে, সেসব এলাকা উন্নত করে কক্সবাজারসহ যেন বাংলাদেশ উন্নত হয় সে ব্যবস্থা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করতে যে মানুষগুলো আছে, তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্প করে দেওয়া হবে। আমরা গ্যাস সঞ্চালন লাইনের কাজ শুরু করেছি। শিল্পায়নের জন্য সারা বাংলাদেশে আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। ট্যুরিস্ট জোন তৈরি করে দেওয়া হবে। নাফ ট্যুরিজম কেন্দ্র স্থাপনের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সোনাদিয়া গভীর সমূদ্রবন্দর স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। বাঁশখালীতে অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ গড়ে তোলা হবে।’

জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, প্রচার সম্পাদক হাসান মাহমুদ, সাংগঠনিক এনামুল হক শামীম, কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহামদ, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, উখিয়া-টেকনাফ আসনের সাংসদ আবদুর রহমান বদি, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিকসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা। সঞ্চলনা করেন সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান।