কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥

কক্সবাজারের উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়ার করিয়ারদিয়া মৌজায় স্থাপিত হতে যাওয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দাবী করেছেন জমির মালিকেরা। আজ শুক্রবার (৫মে) দুপুর ২টায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তারা এই দাবী জানিয়ে বলেন- একর প্রতি ক্ষতিপূরণের অর্থ অন্তত ৫০ লাখ টাকা হওয়া উচিৎ। এবিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট শহীদুল্লাহ চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলননে বলা হয়, একটি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানী বাংলাদেশ লিমিটেড (ইজিসিবি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সরকার করিয়ারদিয়া মৌজার ১২শ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এ সংক্রান্ত ৩ ধারার একটি নোটিশ জমির মালিকদের কাছে পৌঁছানো হয়। কিন্তু অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে জমির মালিকেরা প্রকৃত মূল্য দূরে থাক, তার কিয়দংশও পাবে না। এই আশংকায় আমরা গত প্রায় সোয়া বছর ধরে জেলা প্রশাসন ও ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে জোর দেনদরবার করে আসছি। কিন্তু আমাদের দাবীর সপক্ষে এখনও কোন আশ্বাস পাইনি।

সাংবাদিক সম্মেলনে অধিগ্রহণকৃত জমির উচ্চ উৎপাদনশীলতার কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন- বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য করিয়ারদিয়া মৌজার যে ১২শ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে, তার পুরোটাই লবণ মাঠ। এছাড়া সেখানে ৫ শতাধিক বসতবাড়ীও রয়েছে। বর্তমানে এই এলাকার প্রতি একর জমিতে বার্ষিক লবণ উৎপাদন হয় ৭৫০ মণ, যার বর্তমান বাজারমূল্য সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি। এছাড়া এসব জমিতে বর্ষাকালীন ৬ মাস চিংড়ির চাষ হয়। যেখান থেকে প্রতি একরে আয় হয় প্রায় ৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ এই এলাকার একর প্রতি জমি থেকে প্রতিবছর আয় হয় খরচ বাদে ১০ লক্ষাধিক টাকা। অথচ বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হলে তা হবে মাত্র এক বছরের আয়ের সমান।

তাছাড়া উক্ত জমির উপর প্রায় ১৪ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল। অধিগ্রহণ করা হলে এসব মানুষের জীবন-জীবিকা পড়বে চরম ঝুঁকির মুখে। এরপরও আমরা চাই, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে এখানে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র হোক। তবে তা হওয়া উচিৎ ন্যায্য ক্ষতিপূরণসহ ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথভাবে পূনর্বাবসন করে। ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রতি একর জমির মূল্য অন্তত ৫ বছরের আয়ের সমান বা ৫০ লাখ টাকা হওয়া উচিৎ বলে আমরা মনে করি।

সাংবাদিক সম্মেলনে করিয়ারদিয়া মৌজার অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন হোসাইন আহমদ, হেমায়েত হোসেন, মোহাম্মদ কফিলউদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন, অধ্যাপিকা শিরীন নূর, জামিল ইব্রাহিম, সিরাজুল মোস্তফা মেম্বার, নুর হোসাইন মেম্বার, মনজুর হোসাইন, মানিক মিয়া, কামরুল ইসলাম, বোরহানউদ্দিন, মিজানুর রহমান হিরু ও হেফাজতুর রহমান টিপু প্রমূখ।

ছবির ক্যাপশন: সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট শহীদুল্লাহ চৌধুরী।