ডেস্ক নিউজ:
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর বাকি থাকলেও এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপিসহ সকল দলের অংশগ্রহণে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন আশা করছে দলটি। যে কারণে সাংগঠনিকভাবে শাক্তিশালী দল নিয়েই নির্বাচনী মাঠের লড়াইয়ে নামতে চায় আওয়ামী লীগ।
দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০১৯ সালে। সংবিধান অনুয়ায়ী বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আরেকটি নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই হিসেবে নির্বাচন ২০১৮ সালের শেষের দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে- ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও এমনটা বলা হচ্ছে।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচন হবে ২০১৯ সালের প্রথমদিকে। এর আগেই বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেভাবেই সরকার এগুচ্ছে। আওয়ামী লীগও যে কারণে আগেভাগেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। এমনটাও বলছেন কেউ কেউ।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ড. মিজানুর রহমান শেলী পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে এই অবস্থা চলতে থাকলে অর্থাৎ সংবিধান অনুযায়ী যদি আগামী নির্বাচন হয় তাহলে সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আরেকটা নির্বাচন হবে। তবে বারবার একটি জিনিসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ চাইবে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। সেই কারণেই আওয়ামী লীগ আগে ভাগেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে।’
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আগেই বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে শেলী বলেন, ‘বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী যদি আমাদের দেশে নির্বাচন হয়, তাহলে সেটাই হওয়ার কথা।’
২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পরপর দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ক্ষমতার ধারাবাহিকতার ওপর জোর দিচ্ছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী মহল থেকে তৃণমূলসহ সহযোগী সংগঠনগুলোকে নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য ইতোমধ্যেই দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জোরেশোরেই চলছে নির্বাচনী প্রস্তুতি। নির্বাচন সামনে রেখেই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জেলা সফর থেকে শুরু করে তৃণমূলের দলীয় কোন্দল মেটাতে কাজ করে যাচ্ছে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতি আমাদের সব সময় থাকে। নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম একসঙ্গেই চলছে। আমরা দলকে শাক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এটা শুধু আমার এলাকায় নয়, সারা দেশের সংগঠনগুলো শক্তিশালী করার জন্য কাজ চলছে।’
নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাই তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সঠিক সময়েই হবে। অপেক্ষা করুণ দেখতে পাবেন।’
এছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘বিগত ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতোই সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে।’
আগামী নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হয়। গণতন্ত্রের জন্য যে কোনো সময় নির্বাচন হতে পারে। আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) আওয়ামী লীগের সম্মেলনে স্পষ্টভাবে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলে দিয়েছেন। আমরা নির্বাচন সামনে রেখে সাংগঠনিক প্রস্তুতি ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছি।’
দলের নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমাদের তো ৩০০ আসনে এমপি আছে। এখন আমাদের নেত্রী মনিটরিং করছেন আগামী নির্বাচনে এখান থেকে কাউকে বাদ দেওয়া হবে কী না। কাজের মূল্যায়নে কেউ কেউ বাদ পড়তে পারেন। সেটা দেখভাল করবেন নেত্রী নিজেই।’
বিএনপি আগামী নির্বাচনে আসবে সেটা ধরেই আমরা নির্বাচনের প্রস্ততি নিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন শুধু অপেক্ষায় আছি কখন নির্বাচনী সাইরেন বাজবে।’
কবে নাগাদ জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা আসতে পারে, সে প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন আগামী বছরের শেষের দিকে নভেম্বর অথবা ডিসেম্বরে হতে পারে।’