ইমরান হোসাইন, পেকুয়া :

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূরের মুক্তি দাবীতে উত্তাল হয়ে পড়েছে রাজাখালী। রাস্তায় নেমে পড়ে হাজার হাজার নারী পুরুষ। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তারা। সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে এ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এলাকাবাসীরা।

স্থানীয়রা বলেন, চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূরকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি আমাদের চেয়ারম্যান। একজন সৎ ও জনদরদী জনপ্রতিনিধি। তাকে সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক ফাঁসানো হয়েছে। তাই আমরা অনতিবিলম্বে তাকে ফেরত চাই।

এদিকে সোমবার (১ই মে) বিকেল সাড়ে ৩টায় র‌্যাব-৭ কর্তৃক অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করে চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূরের পরিবার। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূরের স্ত্রী শামসুর নাহার। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে তিনি নির্ধারিত বক্তব্য শেষ করার আগেই এলাকাবাসীরা জড়ো হতে শুরু করে সম্মেলন স্থলে। মূহুর্তেই সম্মেলন স্থল পরিণত হয় জনসমুদ্রে। এসময় এলাকাবাসীরা রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূরকে মুক্তি দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন। পরে তারা স্লোগান দিয়ে মিছিল সহকারে ইউনিয়নের সবুজ বাজার অভিমুখে রওনা করেন।

র‌্যাব-৭ কক্সবাজার সূত্র জানায়, রবিবার (৩০এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের বারাইয়াকাটা এলাকা থেকে ১টি পিস্তল ও ২ রাউন্ড গুলিসহ হাতেনাতে আটক করে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের বদি উদ্দীন পাড়া এলাকার মৃত কাছিম আলীর পুত্র ছৈয়দ নূরকে। পরে তার দেয়া তথ্য মতে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে ১টি এসএমজি (অটোমেটিক সাব মেশিন কারবাইন), ১টি রিভলভার, ১টি ওয়ান শুটার গান ও ৫রাউন্ড রিভলবারের গুলি উদ্ধার করে।

কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের হাতে আটক ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূরের স্ত্রী শামসুর নাহার বলেন, আগামী ৬ই মে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কক্সবাজার আগমন ও জনসমাবেশের প্রস্তুতি উপলক্ষে জেলা আওয়ামীলীগের সভা থেকে ফেরার পথে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে র‌্যাব সদস্যরা আমার স্বামী ও তার সঙ্গীয় দলীয় ৪ নেতাকর্মীদের আটক করে। সেসময় তল্লাশী চালিয়ে অবৈধ কিছু না পেয়ে তাদের নিয়ে কথিত অভিযানের নামে আমাদের রাজাখালী বদিউদ্দীন পাড়ার বাড়িতে আসে র‌্যাব সদস্যরা। বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের ব্যাপক মারধরও করে তারা। পরে এখানেও অবৈধ কিছু না পেয়ে চেয়ারম্যানসহ আটক অপর ব্যক্তিদের নিয়ে চলে যেতে চাইলে স্থানীরা বাঁধা দেয়। কিন্তু র‌্যাব সদস্যরা স্থানীয়দের লক্ষ করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে চলে যায়। এসময় র‌্যাব সদস্যরা ৫রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। মধ্যরাতে আমরা জানতে পারি চেয়ারমানের সাথে আটক অপর চার দলীয় নেতাকর্মীকে র‌্যাব সদস্যরা ইউনিয়নের বকশিয়া ঘোনা এলাকায় গিয়ে ছেড়ে দেয়। শুধুমাত্র চেয়ারম্যানকে নিয়ে চলে যায় র‌্যাব সদস্যরা। পরদিন ১ই মে সকাল ১১ টায় র‌্যাব-৭ কক্সবাজার সম্মেলন কক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূরের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরণের ৪টি অস্ত্র ও ৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে দাবি করে র‌্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে ছৈয়দ নূরের স্ত্রী শামসুর নাহার আরো বলেন, স্থানীয় কুচক্রী মহলের ইন্ধনে র‌্যাব-৭ এর সদস্যরা এই অস্ত্র উদ্ধার নাটক সাঁজিয়ে আমার নিরপরাধ স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে। তার মত জনদরদী মানুষ এ সময়ে হয় না। গরীব নিরহ মানুষের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় কিছু চিহ্নিত অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের পথের কাটা হয়ে দাড়ায় চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূর। তাই তারা চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দিতে এই ষড়যন্ত্র করেছে। চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূরের পক্ষে এলাকার হাজার হাজার মানুষ রয়েছেন। তাদের নিয়ে আমরা আমার স্বামী ও তাদের প্রিয় চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূরকে মুক্তি আন্দোলন চালিয়ে যাবো।