মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আজাদ, ঈদগাঁও:

বাণিজ্যিক এলাকা নামে খ্যাত বৃহত্তর ঈদগাঁওতে স্বনামে-বেনামে বৈশাখ মাসকে সামনে রেখে পুরো জেলা কিংবা বিভাগীয় জুয়াড়ী স¤্রাটেরা বর্তমানে ঈদগাঁওতে অবস্থান করছে। স্থানীয় সরকার দলীয় দুয়েকজন নেতাকর্মীর নামে কিংবা সমিতি বা এলাকার স্বনামধন্য ব্যক্তিদের নাম ভাঙ্গিয়ে অতীতের ন্যায় এবারও অর্ধসহ¯্রাধিক বৈশাখী মেলার নামে জুয়ার আসর বসিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতে ইতিমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে চিহ্নিত জুয়াড়ীরা। খোদ বৈশাখের ১ম তারিখ জুমার দিনেও পোকখালী, ইসলামপুরের নতুন অফিসেও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে জুয়ার আসর। আজ চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের নতুন মহালে ২য় দিনের মত ঐতিহাসিক কালু-ফকির পাড়া জামে মসজিদের উত্তর পাশের্^ বীর মুক্তিযোদ্ধা স্কুলের পাশর্^বর্তী স্থানে মাত্র একটি তাঁবু টাঙিয়ে জুয়ার আসর চলছে প্রকাশ্যে। গতকাল সকালে দেখা যায়, একদল সচেতন ব্যক্তি তার প্রতিরোধ করতে। ইতিমধ্যে স্থানীয় কিছু পাতি নেতাদের কারণে তা আবারো চলছে। সম্প্রতি এ বৈশাখ মাসকে টার্গেট করে জুয়াড়ীদের ১ম মুরব্বীর নেতৃত্বে প্রায় অর্ধ শতাধিক জুয়াড়ী বৃহত্তর ঈদগাঁওর ৬ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের কিছু নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈদগাঁও বাসস্টেশনে অর্ধ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে বৈঠকও সম্পন্ন করেছে।

সূত্রে প্রকাশ, ঐ বৈঠক থেকে প্রায় অর্ধ সহ¯্রাধিক জুয়ার আসর বসিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী, বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে, দিনের বেলায় জুয়ার আসরে মগ্ন থাকলেও রাতের বেলায় চিহ্নিত জুয়াড়ীরা ডাকাতি, অপহরণ ও গরু চুরির কাজে ব্যবহার হতে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। কক্সবাজার জেলার বাণিজ্যিক এলাকা নামে এ ঈদগাঁও খ্যাতি অর্জন করলেও সারাদেশে যতসব নামীদামী বলিখেলা কিংবা বৈশাখী মেলা হবে তার চেয়ে শতাধিক বেশি দেখা যায় এ ঈদগাঁওতে। প্রতিনিয়ত জুয়াড়ীদের আস্তানার ফলে বাঙ্গালীর ঐতিহ্য সম্বলিত বৈশাখী মেলাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ঈদগাঁওর জুয়াড়ীরা। অতীতে ডিসি কিংবা ইউএনও’র কাছ থেকে লিখিত আবেদন নিয়ে এদেরকে অনুমতি দেওয়া হলেও সময়ের ব্যবধানে তা ভিন্নভাবে দেখা যাচ্ছে। সন্ধ্যা হলেই ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে চিহ্নিত জুয়াড়ীরা ঘুরাফেরা করছে। ৭০ হাজার কিংবা তার চেয়ে একটু বেশি পেলেই দ্রুত অনুমতি মিলে। এতে করে পুরো ঈদগাঁওর পরিবেশ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে ধাবিত হয়।

অতীতে দেখা গেছে, মসজিদ ঘেঁষেও জুয়ার আসর বসাতে তাদের দ্বিধাদ্বন্ধ হয় না। সর্বোপরি তদন্ত মাফিক বৃহত্তর ঈদগাঁওতে মাত্র কয়েকটি জুয়ামুক্ত বৈশাখী আয়োজনের অনুমতি দিলেই জুয়াড়ীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাবে।

অন্যথায় গ্রামেগঞ্জেও পরিবারে হানাহানির সংখ্যা বেড়ে যাবে। ইসলামাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে বৈশাখী মেলা ও জুয়াড়ীর আস্তানা সম্পর্কে কথা হলে তিনি জানান, অতীতের ন্যায় কোন অবস্থাতেই জুয়ার আস্তানা গড়ে তুলতে পারবে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জানান, সমাজের অশ্লীলতা কিংবা জুয়ার আস্তানা গড়ে তোলার জন্য কোন খেলার অনুমতি দেওয়া হবে না।