আব্দুল আলীম নোবেল, কক্সবাজার
কক্সবাজার পৌরসভা পরিচালিত নারীদের সেলাই পশিক্ষণ কেন্দ্র । হতদরিদ্র পরিবারের নারীদেরকে আত্ননির্ভশীল করতে এমন উদ্যোগ নিয়েছেন কক্সবাজার পৌরসভা। শহরের প্রাণ কেন্দ্র প্রিপ্যার‌্যাটরি স্কুলে অবস্থিত এই সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে এই পর্যন্ত সাড়ে ৬শ’ নারী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। দু’জন উদ্যোমী নারী সেলাই প্রশিক্ষক নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে এই সাফল্য এনে দিয়েছেন। পৌর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় একটি বিদেশী সেচ্ছাসেবি সংস্থা কর্তৃক তাদেরকে ফ্রি’তে দিয়েছেন ৫শ’ সেলাই মেশিন। যার মূল্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। এমন একটি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল। একই সাথে এই যাত্রা অব্যহত রাখতে দাবীও রাখেন তারা। কারণ এই সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ইতিমধ্যে অনেক বেকার নারী সাবলম্ভী হয়েছেন। অনেকে বাড়ি ঘর সেলাই’র কাজ ও শহরের দর্জির দোকানে চাকুরী করে টাকা আয় করছেন। গরিব পরিবারের মাঝে কিছু টা হলেও অর্থনৈতিক আলো জ্বালাতে সক্ষম হয়েছেন এলাকার বেকার নারীরা।

জানা যায়, বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি কক্সবাজার পৌরসভা এই যাত্র শুরু করেন ২০১২ সালের ফেব্রয়ারীর দিকে। এ সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিভিন্ন ব্যাচ করে দুপর ২ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত নারী প্রশিক্ষাণার্থীদেরকে প্রতি দিন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। নাছিমা আক্তার ও আশরাফা ছিদ্দিকা নামে দু’জন উদ্যোমী নারী সেলাই প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। ইতোতমধ্যে তারা ১৩তম ব্যাচ শেষ করছেন। তাদেরকে প্রশিক্ষণ শেষে দেয়া হয়েছে সনদ। ১৪ তম ব্যাচ আগামী মে মাসের শুরুর দিকে শুরু হচ্ছে।

১৭ মার্চ দুপুরে এই সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গেলে সেলাই প্রশিক্ষকের দায়িত্বে থাকা নাছিমা আক্তার ও আশরাফা ছিদ্দিকা প্রতিবেদককে জানান, কক্সবাজার পৌরসভা কর্তৃক পরিচালিত এই সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া অনেক নারী এখন আর্তনির্ভশীল। এই জনপদের গরিব পরিবারের নারীদের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগ সত্যি প্রশংসার দাবী দার। এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক নারী তাদের পরিবারে কিছু টা হলেও অর্থের যোগান দিতে পারছেন তারা। এছাড়া এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেটি আধুনিকায়ন করতে বেশ কিছু লজটিং সাপোর্ট দরকার। এতে প্রশিক্ষণার্থীরা আরো উন্নত মানের প্রশিক্ষণ নিতে পারবে।

প্রশিক্ষণার্থী উম্মে সালমা জানান, এই সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমি এখন সেলাই মিশিন চালাতে পারি। এতে আমি আমার পরিবারের জন্য আয়-রোজগার করতে পারছি। এই খান থেকে কাজ শিখে আমারমতো অনেকে এখন সেলাই মেশিন চালাতে পারে। কক্সবাজার পৌরসভার বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা কবি শামীম আরা জানান, এলাকার অবহেলিত নারীদের জন্য এই সেলাই প্রশিক্ষ্ণ কেন্দ্রটি পৌর কর্তৃপক্ষের নিঃসন্দেহে ভাল উদ্যোগ। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া নারীরা কেই বসে নেয়। তারা সাবাই সেলাই কাজ করে পরিবারের জন্য আয়-রোজগার করছেন।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র(ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান চৌধুরী জানান, হতদরিদ্র পরিবারের নারীদেরকে আর্তনির্ভশীল করতে এমন উদ্যোগ নিয়েছেন কক্সবাজার পৌরসভা। নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ এই কার্যক্রম অব্যহত থাকবে। এটিকে আধুনিকায়নের জন্য আরো বড় পরিসরে উদ্যোগ নেয়া হবে।