বার্তা পরিবেশক :

পেকুয়ায় সংবাদ সম্মেলনে মগনামার সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইউনুচ চৌধুরীর স্ত্রী জান্নাতুল ফৌরদৌস অভিযোগ করেছেন, মগনামার বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের ইশারায় তার স্বামীকে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কক্সবাজার শহরের কলাতলীর একটি হোটেল থেকে আটক করে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের নামে নাটক সাজিয়েছে। তার স্বামীর বিরুদ্ধে কোন মামলার আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা ছিলনা। এরপরেও ডিবি পুলিশ ওই বিএনপি নেতার কাছ থেকে মোটাঅংকে ম্যানেজ হয়ে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করে জেলে পাঠানোর জন্য চক্রান্তে মেতে উঠেছে।

সোমবার (১৭এপ্রিল) সন্ধ্যায় পেকুয়া চৌমুহুনীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মগনামার সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ চৌধুরীর স্ত্রী জান্নাতুল ফৌরদৌস লিখিত বক্তব্যে আরো অভিযোগ করেছেন, ১৬ এপ্রিল রাত দেড়টার দিকে কক্সবাজারের কলাতলীর একটি হোটেল থেকে তার স্বামীকে ডিবি পুলিশের এসআই মহসিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আটক করে। পরে এসআই মহসিন তার স্বামীকে নিয়ে মগনামাস্থ তাদের বাড়ীতে নিয়ে আসেন। এরপর ডিবি পুলিশ শুরু করে অস্ত্র উদ্ধারের নামে নাটক। রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাদের বাসায় প্রবেশ করে ডিবি পুলিশের এসআই মহসিনের নেতৃত্বে সাদা পোষাকধারী একদল পুলিশ। পুলিশের সাথে মগনামার চেয়ারম্যান ওয়াসিম, তার ভাড়াটে ক্যাডার আশফাকুল ইসলাম লিটন, সাজিব ও গ্রাম পুলিশ আলমগীর ছিল। ডিবি পুলিশের এসআই মহসিন তাদের বাসার কক্ষে ঢুকে কিছু ইয়াবা খাটের উপরে রেখে দেয়। তার কক্ষের আলমিরা থেকে এসময় ৬ লাখ টাকাও লুট করে নেন পুলিশ। এ টাকা গুলো তাদের লবণ বিক্রির টাকা। যা তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন। আর বাইরের পুকুরপাড়ে একটি পাঠের বস্তা ভর্তি চারটি অস্ত্রও পুলিশ রেখে দেয়। একটু পরে তাদের বাড়ীতে অস্ত্র পেয়েছে বলে ডিবি পুলিশ তাদের জানান। এসময় মগনামার সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ চৌধুরীর ছোট ভাই সরওয়ারের ব্যবহুত দুইটি মোবাইল ফোনও কেড়ে নেয় পুলিশ। সরওয়ারকে ডিবি পুলিশ কাকপাড়ার দরগার দক্ষিণ পাশের বেড়িবাধে নিয়ে এসে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। তার দেবর সরওয়ারের কাছ থেকে পুলিশ এসময় সাড়ে তিন লাখ টাকা ঘুষদাবী করেছে এবং দাবীকৃত টাকা সকালের মধ্যে তাদের কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেন। অন্যতায় তার ভাইকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হবে বলে তাকে হুংকার দেয় ডিবি পুলিশের এসআই মহসিন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জান্নাতুল ফৌরদৌস আরো জানান, তার স্বামীকে গত কয়েক মাস ধরে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল মগনামার বর্তমান চেয়ারম্যান ওয়াসিম, তার লালিত সন্ত্রাসী আশফাকুল ইসলাম চৌধুরী লিটন ও সাজিবসহ আরো কয়েকজন সন্ত্রাসী। তারা দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীসহ হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলারও চক্রান্ত করে আসছিল। বিগত ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনে মগনামা ইউনিয়নে শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী ছিল ইউনুচ চৌধুরী। নির্বাচনী ক্লেসের পাশাপাশি এস আলম গ্রুপের লবণ ও চিংড়ি প্রজেক্ট অবৈধ পন্থায় ভোগ করতে বর্তমান চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম ইউনুচ চৌধুরী পথে কাটা মনে করে চিরতরে শেষ করার ফন্দি ও কৌশল করে আসছিল। তিন বছরের জন্য এস আলম গ্রুফের প্রতিনিধি বাহাদুর শাহ এর কাছ থেকে ১৭০কানি জমি লাগিয়ত নিয়েছিল। যাহার মেয়াদ আরো দুই বছর বাকী রয়েছে। উক্ত লবণ মাঠ ও চিংড়ি প্রজেক্ট সন্ত্রাসী কায়দায় ভোগ করার জন্য অস্ত্র উদ্ধারের নামে মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন। তিনি আরো জানান, কক্সবাজার ডিবি পুলিশের ওসি অংসা থোয়াইন ও এসআই মহসিনকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে মগনামার চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম তার নিরাপরাধ স্বামীকে আটক করে অস্ত্র উদ্ধারের নামে নাটক সাজিয়েছে। যা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র, উদ্দেশ্যেমূলক ও চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। তার স্বামীকে আটক করেছে কক্সবাজার থেকে। এসময় তার কাছ থেকে কোন অবৈধ ইয়াবা ও অস্ত্র পাইনি ডিবি পুলিশ। এরপর তার স্বামীকে নিয়ে রাতেই ডিবি পুলিশ মগনামায় নিয়ে এসে কথিত অস্ত্র উদ্ধারের নাটক মঞ্চস্থ্য করেছে।

তিনি এ ঘটনার সুষ্টু তদন্তসহ তার নিরীহ স্বামীকে মিথ্যা মামলার হয়রানী থেকে রেহাই দিতে পুলিশের আইজিপি, চট্টগ্রামের ডিআইজি ও কক্সবাজার পুলিশ সুপারের কাছে হস্থক্ষেপ চেয়েছেন। এদিকে মগনামার জনপ্রিয় সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ চৌধুরীকে অস্ত্র উদ্ধারের নামে নাটক সাজিয়ে আটক করার ঘটনায় স্থাণীয় এলাকাবাসীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অবিলম্বে ইউনুচ চৌধুরীকে হয়নারী না করার জন্য প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিহীত আবেদন জানিয়েছেন।