বিশেষ প্রতিবেদক :

চকরিয়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী পার্বত্য জেলার লামা উপজেলার কুমারী ষ্টেশনের দক্ষিণ পার্শ্বে সাড়ে ৪মাইল ঘোনার বীর মুক্তিযোদ্ধার ৫১ একর জমির উপর সৃজিত বাগানের গাছ কেটে নিয়ে যায় এবং জায়গা দখল করে। এতে বাঁধা দিলে মুক্তিযোদ্ধাকে প্রাণনাশের হুমকী দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পার্বত্য বান্দরবান জেলা লামা উপজেলার ২৮৬নং ফাঁসিয়াখালী মৌজার বড় ছনখোলা ইউনিয়নের পাহাড়ী জায়গার সরকারী বন্দোবস্তিকৃত মালিক চকরিয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বাটাখালী গ্রামের প্রয়াত লাতু শুক্ল দাশের পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্জুন শুক্ল দাশ (এল.এন.জি ম্যান) ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ওয়ারীশগণ বিগত ১৯৭৯-৮০ সনে এই ৫১ একর জায়গা বন্দোবস্তি পায়। এই বিস্তৃর্ণ অনাবাদী জায়গার উপর দীর্ঘ ৫ বছর পূর্বে ম্যালেরিয়া,মেহগনি , আগর এবং বনজ ও ফলজ গাছের চারা রোপনের বর্তমান এই সবুজ শ্যামল আমাদের সৃজিত বাগানের গাছ কেটে প্রতিনিয়ত নিয়ে যাচ্ছে এবং ১০ একর মত জায়গা দখল করার সংবাদ পেয়ে আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা বাগানে গিয়ে চতুরপাশ ঘুরে দেখে অতি ভারাক্লান্ত মনে কুমারী বাজারস্থ গ্রামে দখলবাজ বনখেকো ও প্রভাবশালী কুটনৈতিক ব্যক্তি নোয়াখালী থেকে আগত মমতাজকে এ সমস্ত কর্মকান্ড না করার অনুরোধ করলে সাথে সাথে তার ২ছেলে সানা উল্লাহ ও জাকের সহ তাদের বাগান প্রহরী ম্যানেজার এবং কর্মচারীরা উৎকন্ঠে বলে যে, যে জায়গা আমরা গাছ কেটেছি ও দখল করে নিয়েছি এ জায়গা যদি ছেড়ে না দিলে আমরা যেকোন মুহুর্তে ,যেকোন সময়, যে রূপ ঘটনা ঘটাতে হয় বা রটাতে হয় তাও করতে আমরা সর্বদাই প্রস্তুত । এতে মুক্তিযোদ্ধা হউক আর যেই হউক আমাদের পথের কাটা হওয়া মাত্র তাকে হত্যা ও গুম করতে কিংবা জায়গা দখলের যেরূপ চেষ্টা করতে হয় তাও করে যাব বলে উল্ল্খে করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্জুন। অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বড়ছনখোলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে কুমারী বাজারস্থ গ্রামে নোয়াখালী থেকে আগত এ প্রভাবশালী মমতাজ স্ব-পরিবারে বসবাস করে । বিধায় তার বসবাসরত গ্রামের অর্থাৎ কুমরী ষ্টেশনের দক্ষিণে প্রায় ১ কি.মি পর আমার আর হোল্ডিং নং ১২৭, ১২৮ ,১৯০, ১৯১ ,৪১২,৫২৭,১০৬১, ১০৭২ ও আরো ৬টি হোল্ডিং নং বন্দোবস্তি ৫১ একর জায়গায় আমি অতীব কষ্টের এ বাগান ভবিষ্যত আশায় সৃজন করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত হলেও সত্য যে নানান অপরাধের গর্ড ফাদার প্রভাবশালী মমতাজ ও তার স্বশস্ত্রধারী বনখেকো ও দখলবাজ ২ ছেলের অবৈধ শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে আজ আমার বাগানের প্রায় ২০ একর মত গাছ ক্রমাগতভাবে উদাও হতে চলছে। তাছাড়া ১০ একর মত জায়গা দখল করে রেখেছে। এতে আমি অসহায় মুক্তিযোদ্ধার প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মত ক্ষতিসাধন করেছে।

অভিযোগকারী আরো জানান, বিগত ২০১৩ সনের ২০ জানুয়ারী আমাকে জেলা পরিষদ টুলবক্সের সামনে প্রভাবশালী মমতাজ ও তার ডাকাত ছেলেরা আমাকে অনাহুতভাবে অতর্কিত অবস্থায় এসে মারধর করাতে আমি তাদের জন্য মামলা করেছিলাম। এরপরও বর্তমানে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে আমার সবুজ বাগানে গাছ কেটে ও জায়গা দখল করে আমাকে আর্থিক ,মানসিক ,নির্যাতন ও অত্যাচারের স্বীকার হতে হচ্ছে। এলাকার সচেতনমহল জানান,এ প্রভাবশালী মমতাজ ও তার ছেলেদের শক্তিশালী অবৈধ সিন্ডিকেটের কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্জুন সহ পার্শ্ববর্তী আরো বিভিন্ন বাগান/প্লটের মালিকেরা তাদের নির্যাতনের স্বীকার । তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে থানা আদালতে ৪-৫টি মামলা থাকার পরও কিভাবে আইনের হাত থেকে পার পায় এ নিয়ে গম্ভীর চিন্তিত এলাকাবাসী। এদের ভয়ে এলাকার নিরহ ও সচেতন মহল মুখ খুলে তাদের বিরুদ্ধে কোন অপরাধের কথা স্বীকার করে না।

মুক্তিযোদ্ধা অর্জুনের বন প্রহরী মো:ছিদ্দিক জানান প্রভাবশালী মমতাজ আমাকে ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বাগান/প্লটের মালিক বিগত ৮ বছর যাবত বিভীষিকাময় নির্যাতন অত্যাচার ও মানসিক , আর্থিক ক্ষতিসহ বিভিন্ন সময় হুমকী স্বরূপ কথাবার্তা বলত । এর পরও আমি বন প্রহরীকে জানে মেরে ফেলার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টাও করছিল। কিন্তু কেন আমিতো একজন মাসিক বেতনধারী লেবার। তবুও আমাকে উক্ত বাগান রক্ষণাবেক্ষণ এর দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনেক সময় এখনও ধৃত করে এবং নানান হুমকী স্বরূপ কথাবার্তাও বলতে থাকে। এসমস্ত বিষয় বাগান মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে জানালে মুক্তিযোদ্ধা ৪ ও ৫নং ইউনিয়ন প্রতিনিধিদেরকে অভিযোগ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি ।

জানতে চাইলে ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো: আলমগীর ও ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো:রহিম বলেন , বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্জুন শুক্ল দাশ একজন সহজ, সরল ,শান্তিপ্রিয় অসহায় ব্যক্তি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় অত্র ইউনিয়নের কুমারী বাজারস্থ গ্রামের প্রভাবশালী মমতাজ ও তার ২ ছেলের বিরুদ্ধে আমাদেরকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছে। আমরা ২ মেম্বার যৌথ ও পৃথক পৃথকভাবে প্রভাবশালী মমতাজ ও তার ছেলেকে বীর মুক্তিযোদ্ধার সৃজিত বাাগানের কোন গাছপালা না কাটার জন্য কিংবা জায়গা দখলের চেষ্টা না করার জন্য কয়েকবার নিষেধ করেছিলাম। কেননা তাদের বিরুদ্ধে আরো পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন বাগান মালিকদের অভিযোগও আছে বলে জানান। তাই আমরা মমতাজ গংকে অর্থ ও অবৈধ জনবলের সিন্ডিকেটের প্রভাব না খাটানোর জন্য এবং এলাকার মধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মত ধর্তব্যের অপরাধের ঘুলাট নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী পরিবেশ তৈরী না করার অনুরোধও করেছি। তবুও যখন তারা নানান ধরণের অপরাধ করে চলছে তাই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন এই ২ প্রতিনিধি।

সর্বোপরি মুক্তিযোদ্ধার অর্জুন বলেন, মমতাজ গং সিন্ডিকেট অর্থবিত্ত ও অবৈধ জনবল এর মাধ্যমে আমি অসহায় মুক্তিযোদ্ধাকে দীর্ঘদিন যাবৎ আর্থিক ,মানসিক হয়রানি করছে এবং বর্তমানেও করে যাচ্ছে এতে বাধা দিলে আমাকে খুন করে প্রয়োজনে লাশ গুম করে ফেলবে বলে এমন অসৎ আচরণ করতেছে । তাই আমি জরুরী ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ একান্তভাবে কামনা করছি । এ কারণে যেন আমার বাগানের গাছ লুঠপাত , জায়গা দখল সহ ভবিষ্যতে নির্যাতন স্বীকার হতে ন্যস্তা পাই বলে উল্লেক করেন মুক্তিযোদ্ধা।