প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে নাগরিকদের ব্যক্তিগত ও অন্যান্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে গোপনীয়তার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে সরকারের আইনসম্মতভাবে মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট মাধ্যমে যোগাযোগে আড়ি পাতার ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ করা হয়েছে তাকে সংবিধান ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি হিসাবে আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মন্তব্য করেছে যে, সরকারের আড়ি পাতার ব্যবস্থা সরকারকেও জিম্মি করতে পারে।

শনিবার (১৪ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, জাতি হিসেবে বাঙালির পরিপূর্ণ বিকাশের ক্ষেত্রে বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা যেখানে অপরিহার্য সেখানে ‘নজরদারিপ্রযুক্তি’ বা ’আড়ীপাতা প্রযুক্ত’ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে এবং বাঙালির তৃতীয় জাগরণের পর্যায়ে বাধাগ্রস্থ হবে, যা বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে প্রচন্ড হুমকি।

নেতৃদ্বয় আরো বলেন, ইসরায়েল থেকে বাংলাদেশ সরকারের ব্যাপক বিতর্কিত ‘নজরদারিপ্রযুক্তি’ কেনা সংবিধানের গুরুতর লঙ্ঘন। এই প্রযুক্তি সংবাদপত্রের তথা গণমাধ্যম সহ সকল ধরনের মত প্রকাশে ত্রাসের ভূমিকা গ্রহণ করবে। আড়ীপাতার মত ভয়ঙ্কর হাতিয়ার শুধুমাত্র বিরোধী দলের কণ্ঠরোধ করবে না, ভূ-রাজনীতির অপকৌশলের প্রয়োজনে সরকারকেও জিম্মি করে ফেলতে পারে। এই ভয়ঙ্কর প্রযুক্তি ব্যবহার হবে সকলের জন্যই আত্মঘাতী।

তারা বলেন, কার স্বার্থে, কী প্রেক্ষিতে, কী উদ্দেশ্যে নজরদারীপ্রযুক্তি কেনা হয়েছে বা আড়ী পাতা ব্যবস্থা করা হবে তা জনগণকে অবশ্যই অবহিত করতে হবে। আমাদের সংবিধান যেখানে তথ্যের ও যোগাযোগের গোপনীয়তা সুরক্ষা এবং বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে সেখানে এই ধরনের প্রযুক্তি মৌলিক অধিকার হরণে বিরাট ঝুঁকি সৃষ্টি করবে।

নেতৃদ্বয় বলেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে আইনসম্মতভাবে আড়ি পাতার ব্যবস্থা চালু করা হলে এর অপব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে। আড়ি পাতা ব্যবস্থা চালু হলে বিরোধীদের দমনে এটি সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। তবে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার কারণে যদি বিশেষ ব্যক্তির ক্ষেত্রে আড়ি পাতা হয় সেটি আদালতের মাধ্যমে হওয়া বাঞ্ছনীয়। তাছাড়া আড়ি পাতার বিষয়টি সার্বিকভাবে সংবিধান প্রদত্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকেই ক্ষুন্ন করবে।

তারা বলেন, রাষ্ট্র্রের নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা স্বার্থে আড়ি পাতা হলে সেটা বৃহৎ স্বার্থে মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু তারও একটা কাঠামো থাকতে হবে। বেআইনিভাবে আড়ি পাতা এখনও হচ্ছে। তবে এবার সেটি আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে সাংবিধানের চেয়েও কিছু আইন দেশে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। তবে এগুলো শেষ পর্যন্ত টিকবে না। যাঁরা করছেন বা করবেন তাঁরা নিজেরাই এসব আত্মঘাতী কালো আইনের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।