মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:
চকরিয়ায় বিজিবি’র জব্দ করা ৬ গাড়ি গরু নিলামে কিনে আরদে নেয়ার পথে ৪টি গরু ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বিজিবি’র উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেলে ডাকাত দলের দু’টি মোটরসাইকেল জব্দ করে হাইওয়ে পুলিশ।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে ডুলাহাজারা রংমহলে মিয়ানমার গরুর আরদ পার হয়ে মহাসড়ক দিয়ে ডুলাহাজারা ডিগ্রী কলেজ গেইট পৌঁছলে গরুর এসব গাড়ি ডাকাত দলের কবলে পড়ে।

খবর পেয়ে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, চকরিয়া থানা ও মালুমঘাট হাইওয়ে থানার একাধিক পুলিশ ফোর্স গরুগুলো উদ্ধার তৎপরতা চালায়। এসময় ডাকাত দলের ফেলে যাওয়া ডিসকভার ও সুজুকী নামের দু’টি মোটরসাইকেল জব্দ করে মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশ। যার নাম্বার রয়েছে (চট্টমেট্রো হ- ১৭-৫০৬৮ ও কক্সবাজার ল- ১১-৪৬২২)।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, দেশের সীমান্ত এলাকা পার হয়ে অবৈধভাবে মিয়ানমার গরু অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় বর্ডার গার্ড ব্যাটেলিয়েন (বিজিবি-১১)। গত কদিন আগে আলীকদম হয়ে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পার করার সময় চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ও খুটাখালী পৌঁছার আগে ১২৪ টি মিয়ানমার গরু জব্দ করে বিজিবি। পরে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জব্দ করা এসব গরু নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি’র মাধ্যমে নিলাম ডাকা হয়। শুক্রবার আয়োজিত এই নিলামে সর্বোচ্চ ডাক হিসেবে গরুগুলো ৮২ লাখ ৫ হাজার টাকায় (ভ্যাট যুক্ত হবে) পেয়েছে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হোসাইনসহ আরো কয়েকজন শেয়ারদার।

পরদিন গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দিকে গরুগুলো ৬টি ট্রাক যোগে চকরিয়া আরদে আনা হচ্ছিল। সাথে নিরাপত্তায় নিয়োজিত নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি’র ফোর্সসহ একটি গাড়ি ছিল। লামা ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন থেকে এই ৬টি ট্রাক ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রংমহল এলাকায় গাড়িগুলো দাঁড় করায়। সেখানকার আরদের লোকজন ইজারার টাকা চাইলে সরকারী নিলামের কাগজপত্র দেখে গাড়িগুলো ছেড়ে দেয়। পরে ডুলাহাজারা ডিগ্রী কলেজ পর্যন্ত পৌঁছলে সামনের কয়েকটি ট্রাক আকস্মিক ডাকাতের কবলে পড়ে।

গরু বহনকারী ট্রাক চালকরা জানায়, ৮-১০ জনের একটি ডাকাত দল তেল বিক্রির খালি ড্রাম দিয়ে মহাসড়ক ব্যারিকেট দিলে আমরা থেমে পড়ি। পেছনের গাড়িগুলো আসার আগেই ৪টি গরু দ্রুত নামিয়ে কয়েকজন ডাকাত পালিয়ে যায়। অপর ডাকতরা গাড়ি থেকে আরো গরু নামাতে গিয়ে পেছনের গাড়িগুলো সহ বিজিবি’র গাড়ি উপস্থিত হয়। এসময় নিজেদের রক্ষা করতে ব্যবহৃত দু’টি মোটরসাইকেল ফেলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে ডাকাত দল। খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান, থানা ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।

এ বিষয়ে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর জানান, ডাকাতির খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। থানা ও হাইওয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে দুই থানার ওসিসহ ফোর্স সহকারে আসলে আমরা সবাই মিলে গরুগুলো উদ্ধার তৎপরতা চালাই। তবে ডাকাতদল দ্রুত গ্রেপ্তার হবে বলে আমি আশংকা করি।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, ডুলাহাজারা ডিগ্রী কলেজ সংলগ্নে ডাকাতি খবর পেয়ে ফোর্স সহকারে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। ফেলে যাওয়া মোটরসাইকেল দুটির সুত্র ধরে ডাকাত দল বেশিদূর যেতে পারবে না। দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।

ডাকাত দলের ফেলে যাওয়া মোটরসাইকেল দুটি জব্দ করা হয়েছে উল্লেখ করে মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ওসি মাকসুদ আহমেদ জানান, জড়িতদের দ্রুত সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। আমি যোগদানের আগেও একই এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনেছি। সেটিও এই ডাকাতরা ঘটিয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই।