সংবাদদাতা:

কর্মশালায় শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সচেতনতা, ইন্টারনেটে সুরক্ষা, দায়িত্বশীলতার সাথে স্বাধীন মতপ্রকাশ, ডিজিটাল আইন, ডিজিটাল অপরাধ, অনলাইনে ব্যক্তি পরিচয়, মিথ্যাচার ও ভুল খবর প্রচার এবং এ সংক্রান্ত আরও অনেক বিষয়ে আলোচনা করা হয়। অধিবেশনে উপস্থিত সকলেই এই প্রকল্পের উদ্যোগের সহায়তায় ডিজিটাল দুনিয়ায় মুক্ত ও নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন কার্যকর ও বাস্তবমুখী পরামর্শ প্রদান করেন।

আজ ডিসেম্বর ৫, ২০২২’এ, ঢাকার বারিধারায় অ্যাস্কট দি রেসিডেন্স’এ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)’র অর্থায়নে, ডিনেট এবং ফ্রেডরিক নওম্যান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম’এর যৌথ আয়োজনে ‘Foster Responsible Digital Citizenship to Promote Freedom of Expression in Bangladesh’ প্রকল্পটির অধীনে Advocacy Dialogue: awareness and protection of digital citizenship and rights শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালাটিতে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন গণ্যমান্য আইনজীবীরা ও স্বনামধন্য মিডিয়ার প্রতিনিধিরা যারা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

আর্টিকেল ১৯ এর আঞ্চলিক পরিচালক ফারুক ফাইসেল বলেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এ এর নির্দিষ্ট সংজ্ঞা থাকা জরুরী ছিল। কোন বিষয়গুলো ভাবমূর্তির মধ্যে পরবে বা ক্ষুণ্ণ হবে না তাও উল্লেখ করলে জনসাধারণের জন্য বুঝতে সহজ হত। একই সাথে সাইবার সিকিউরিটি ও সাইবার ক্রাইম শব্দগুলোর পরিষ্কার ব্যাখ্যা থাকা দরকার। এর প্রয়োগ সুষ্ঠুভাবে না হলে তা বাংলাদেশের জন্য বদনাম বয়ে আনবে।

ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোস্ট, মানহানি বিষয়ক সবচেয়ে বেশি মামলা হচ্ছে। কিন্ত মামলার অগ্রগতি কম হচ্ছে বলে বলেন আইনজীবীরা।

মো: সাইমুম রেজা তালুকদার বলেন, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্বশীল ডিজিটাল সিটিজেন হতে সহায়তা করা এবং তাঁদের মাঝে গঠনমূলকভাবে স্বাধীন মতপ্রকাশের চেতনা গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এই প্রকল্প কাজ করে যাচ্ছে।

কর্মশালাতে ডিনেট’এর নির্বাহী পরিচালক এম. শাহাদাৎ হোসেন বলেন- তরুণ-তরুণীদের ডিজিটাল দুনিয়ায় অধিকার চর্চার সুযোগ করে দিতে ও দেশ গড়ার কাজে অনলাইন দুনিয়াকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করার দক্ষতা অর্জনের ব্যবস্থা করে দিতে সমাজের সকল স্তর থেকে কাজ করতে হবে। তবেই কেবল আমরা এই ডিজিটাল যুগে আমাদের দেশের জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারব।

কর্মশালাতে এই প্রকল্পের অধীনে তৈরি করা অ্যাডভোকেসি ব্রিফটি সকলের সামনে তুলে ধরেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অ্যাডভোকেট মো: সাইমুম রেজা তালুকদার। পরবর্তীতে তিনি এই ব্রিফটিতে উল্লেখ করা বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে উপস্থিত সকলের সাথে সাথে একটি প্রাঞ্জল মতবিনিময় সেশন পরিচালনা করেন। বাংলাদেশের অনলাইন দুনিয়াকে তরুণ নাগরিকদের জন্য আরও সহায়তামূলক করে তোলার জন্য করণীয় বিভিন্ন পরামর্শ এই আলোচনার মাধ্যমে উঠে আসে।

এই কর্মশালার আলোচিত অ্যাডভোকেসি ব্রিফটি প্রকল্পের ওয়েবসাইট https://www.digitalcitizenbd.com/ থেকে ডাউনলোড করা যাবে। এর পাশাপাশি এই ওয়েবসাইটে আছে তরুণ সমাজবান্ধব বিভিন্ন উদ্যোগ যা থেকে শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল সিটিজেনশিপ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষণীয় বিষয় জানতে পারবেন এবং একটি গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা চর্চার পদ্ধতি সম্পর্কে জানবেন। যা তাঁদের ডিজিটাল দুনিয়ায় বিচরণের ক্ষেত্রে আচরণগত পরিবর্তন এনে একজন গর্বিত ডিজিটাল নাগরিকে পরিণত হতে সহায়তা করবে।

সভায় উপস্থিত সকলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম মজুমদার, সাইবার অ্যান্ড সাইবার সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্স থেকে কাজী মোস্তাফিজ, পারভেজ আলম, অ্যাডভোকেট মঞ্জিলা সুলতানা, অ্যাসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর বিবি ফাতেমা মুন্নি, অ্যাডভোকেট কাইউম আহমেদ সহ আরও অনেকে।