মমতাজ উদ্দিন আহমদ, আলীকদম :

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) ভোররাতে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার সদরের খুইল্যা মিয়া পাড়ায় আগুনে পুড়েছে ৫ বসতঘর ও ৭ দোকান। আগুন লাগার প্রায় আধাঘন্টা পর ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আগুন নিভানো হয়। এতে হতাহত না হলেও সহায়-সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সরেজমিন জানা গেছে, উপজেলার সদরের খুইল্যা মিয়া পাড়ায় বারেক মুন্সির কলোনী হিসেবে পরিচিত একটি দোকান থেকে আগুনে সূত্রপাত হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ছৈয়দ আলম জানান, রাত তিনটার সময় তিনি দোকানের পাশে একটি ময়লার স্তুপে আগুন দেখেছিলেন। তবে বাড়ি ও দোকানপ্লটসমুহের মালিক ছেনোয়ারা বেগম এই আগুনকে অন্তর্ঘাতমূলক বলে মনে করছেন। তিনি জানান, তার ক্ষতিসাধিত করতে প্রতিপক্ষ আগুন দিয়েছেন!

স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুনে পাঁচটি বসতঘর ও সাতটি দোকান পুড়ে সম্পূর্ণ ছাই হয়ে যায়।

ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র ফায়ার ফাইটার শাহাদাত হোসেন বলেন, আলীকদম ও লামা উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগে।

খুইল্যা মিয়া পাড়ার সর্দার ফরিদুল আলম বলেন, আগুনে পুড়ে পাঁচটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে একটি প্রতিবন্ধী পরিবারও ছিল। সাতটি দোকান পুড়েছে। এরমধ্যে পাঁচটি ফার্নিচার ও কাঠের দোকান, একটি মুদি দোকান ও একটি মেশিনারি মেরামতের দোকান ছিল।

আগুনে মহিউদ্দীনের মুদি দোকান, আব্দুস সোবাহান, কেশব ধর, তুষার ধর, হারুনের কাঠের দোকান, শাহ আলমের ফার্নিচারের দোকান, ও নজরুল ইসলামের মেশিনারি মেরামতের দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়। আগুনে ভাড়া বাসায় থাকা শামসুল আলম, নুরুল হক, ফারজানা আক্তার, সালাউদ্দীন ও কলোনীর মালিক ছেনুয়ারা বেগমের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আগুন লাগা খানিক পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহরুবা ইসলাম এবং থানার ওসি মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন সরকার অগ্নিকান্ডস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে ওই পাড়ার বাসিন্দা এবং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন ছাড়া অগ্নিকা-স্থলে অন্যকোন জনপ্রতিনিধের দেখা যায়নি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনো খাবার, চাল, ডাল, তেল, হাঁড়ি-পাতিল, বালতি ও মগ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহযোগিতা করা হবে বলে জানান ইউএনও।

আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন সরকার অগ্নিকান্ডের সময় সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং পুলিশ সদস্যদের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মালামাল রক্ষাসহ সার্বিক সহযোগিতার নির্দেশ দেন।