এম.এ আজিজ রাসেল :
ত্যাগের মহিমা ও ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যতার মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আযহা। রোববার (১০ জুন) সকাল ৮টায় কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রধান জামাত। নামাজের ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা সোলাইমান কাশেমী। জামাতের আগে খুতবা ও বয়ানে কোরবানির তাৎপর্য তুলে ধরা হয়।

নামাজের আগে সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈল, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান।

প্যানেল মেয়র হেলাল উদ্দিন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ঈদ জামাতে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবছার।

নামাজে প্রায় ১৫ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লী অংশগ্রহণ করেন। ঈদের নামাজ ও খুতবা শেষে মোনাজাতে দেশ, জাতি, মুসলিম উম্মাহর শান্তি, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। পরে অনেকেই ছুটে যান কবরস্থানে। সেখানে কবর জিয়ারত শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় যে যার সাধ্যমতো পশু কোরবানি দেন।

কক্সবাজার পৌরসভার উদ্যোগে এবার অর্ধশতাধিক নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির পশু জবায়ের ব্যবস্থা করা হয়।

এদিকে ঈদের প্রথমদিনে কক্সবাজারে তেমন কোন পর্যটক চোখে পড়েনি। সৈকত ও হোটেল-মোটেলেও দেখা যায়নি পর্যটকদের ভীড়। পর্যটন স্পটগুলো ছিল শুধুমাত্র স্থানীয়দের বিনোদনের প্রধান উৎস। তবে ঈদের দ্বিতীয় দিনে আশানুরূপ পর্যটকের সমাগম হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

বাঙালি সমাজে কোরবানির ঈদ নামে পরিচিত মুসলমানদের এই অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। যুগ যুগ ধরে এই ঈদ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর করে আসছে।

প্রায় চার হাজার বছর আগে হজরত ইবরাহিম (আ.) আল্লাহ তায়ালার আদেশ পালনের উদ্দেশ্যে প্রাণপ্রিয় জ্যেষ্ঠ পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-কে তাঁর পূর্ণ সম্মতিতে কোরবানি করতে উদ্যত হন। মক্কার নিকটস্থ ‘মিনা’ নামক স্থানে এই মহান কোরবানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তাঁর ঐকান্তিক নিষ্ঠায় সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে তাঁর পুত্রের স্থলে একটি পশু কোরবানি করতে আদেশ দেন। আল্লাহর প্রতি অবিচল আনুগত্য ও নজিরবিহীন নিষ্ঠার এ মহান ঘটনা অনুক্রমে আজও সৌদি আরবের মিনায় এবং মুসলিম জগতের সর্বত্র আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে পশু কোরবানির রীতি প্রচলিত রয়েছে।