সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :
মিউনিসিপ্যাল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ “ম্যাব” এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে বিপন্ন মানবতার কল্যাণে যে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি ও নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দুর্যোগ মোকাবিলায় একটি সক্ষম দেশে পরিণত করেছেন। দেশের এই সাফল্যের কৌশল জানতে পুরো বিশ্বও এখন উন্মুখ।’
রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের মিরসরাই পৌরসভা মিলনায়তনে বাংলাদেশ পৌরসভা সমিতির উদ্যোগে জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস (ইউএনডিআরআর) বিভাগের মেকিং সিটিস রেসিলিয়েন্ট (এমসিআর-২০৩০) বাস্তবায়নের লক্ষে ২৬টি পৌরসভার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মীরসরাই পৌরসভার মেয়র মোঃ গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম বিভাগের ২৬টি পৌরসভার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় ম্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যে সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ১৯৭৫ সালে তাকে নির্মমভাবে হত্যার পর তা স্তিমিত হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রশমনে জাতির পিতা কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়। তার সুদৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ হয়েও আজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ‘রোল মডেল’ হিসেবে গণ্য ।
‘১৯৭০ সালে এই ভূখণ্ডে আঘাত হানে এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস। এই দুর্যোগের ব্যাপারে আগাম কোনো সতর্কতাই দেয়নি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। আর এই ঝড় চলে যাওয়ার পর ত্রাণ ও উদ্ধার কাজেও সেভাবে কোনো উদ্যোগ নেয়নি তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী। ঘূর্ণিঝড়ে শোষক পাকিস্তানিদের তৎকালীন পূর্ববাংলার মানুষের প্রতি চরম অবহেলা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার কারণে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। সেটি ছিল স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সে সময় ১৯৭০ সালের নির্বাচনি কর্মকাণ্ড ছেড়ে বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান।’ একইভাবে ১৯৯১ সালেও প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড়ে বহু মানুষ প্রাণ হারায়।

মুজিবুর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর উপকূলীয় অধিবাসীদের জানমাল ও সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি লাঘবের লক্ষ্যে দেশের পৌরসভাগুলো আগাম দুর্যোগ সতর্ক বার্তা প্রচার, অপসারণ ও উদ্ধার, ২০১২ সালের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা স্থায়ী আদেশাবলী (এসওডি) প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, প্রশাসনিক কাঠামো, বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি, নদী এবং উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ, মহামারি করোনা মোকাবিলা প্রভৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রশমনের এই প্রয়াস আজ বিশ্বমহলে প্রশংসিত।
এমন বাস্তবতায় আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের শহরগুলোর অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ, স্থিতিস্থাপক এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ যে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করছে তার জন্য জাতিসংঘের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ম্যাব নেতা মুজিব।

অনুষ্ঠান সমন্বয়কারী ম্যাব এর ব্যবস্থাপক আবদুর রওফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় চন্দনাইশ পৌরসভার মেয়র মাহবুবুল আলমসহ ২৬টি পৌরসভার প্রতিনিধি অংশগ্রহণমূলক বক্তব্য রাখেন।