অনলাইন ডেস্ক:

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের সাথে রেল সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর থেকে সরাসারি রেলপথে কন্টেনার ঢাকা আইসিডি’তে পরিবহনের এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বন্দর নগর এবং সমুদ্র তীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে মেগা প্রকল্পসমূহের অর্থনৈতিক সুফল পেতেই চট্টগ্রামের মধ্যদিয়ে এই সংযোগ স্থাপন করা হবে। পর্যটনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সিঙ্গাপুর, হংকংসহ দ্বীপভিত্তিক অর্থনৈতিক হাবগুলোর আদলে কক্সবাজারকে গড়ে তুলতে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর। ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ হলে মাতারবাড়ি বন্দরের টার্মিনালে ভিড়তে পারবে ১৮.৫ মিটার গভীরতার জাহাজ। অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহের কারণে কঙবাজারের সঙ্গে ঢাকার রেলপথের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। এ কারণে, কক্সবাজারের সঙ্গে রেলপথে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি পণ্য পরিবহন সহজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইনের চকরিয়া অংশ থেকে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষে ডিজাইনের কাজও শেষ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা। মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাথেও যুক্ত হবে এই রেলপথ।
এই ব্যাপারে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কঙবাজার ডাবল লাইন ডুয়েল গেজ নির্মাণ সমীক্ষা প্রকল্পের পরিচালক এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালক (প্রকৌশল) মো. আবিদুর রহমান আজাদীকে জানান, চকরিয়া থেকে মাতারবাড়ি পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণের ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ হয়েছে। এই প্রকল্পের ডিজাইনও হয়ে গেছে। এখন আমরা ফান্ডের জন্য বিভিন্ন দাতা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করছি। অর্থায়ন নিশ্চিত হওয়ার পরই মূল প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে। এই ২৬ কিলোমিটারের মধ্যে অনেকগুলো ছোট-বড় নদী-খাল রয়েছে। বড় নদী আছে দুটি, খাল আছে অনেকগুলো। তাই এই ২৬ কিলোমিটারের মধ্যে ১১ কি.মি. এলিভেটেড হবে। এজন্য বিশাল ফান্ডের দরকার। প্রকল্প ব্যয় এখনো ফাইনাল হয়নি-তবে প্রিলিমিনারি ১৩ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পে সাড়ে ৪শ’ একর ভূমির দরকার হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গভীর সমুদ্রবন্দরের পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঢাকা-কঙবাজার রেলপথকে ধলঘাটায় বন্দরের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম-কঙবাজার রেলপথ নির্মাণের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। চট্টগ্রাম-কঙবাজার রেল লাইনের চকরিয়া অংশে যুক্ত হবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর থেকে আসা রেল লাইনটি।
ধলঘাটের বন্দর এলাকায় সড়কপথে যেতে হলে বেশ কিছু নদী পার হতে হয়। কঙবাজার থেকে ধলঘাট পর্যন্ত উন্নত সড়ক ও সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২৭ কিলোমিটার সড়ক ও ১৭টি সেতু নির্মাণের কথা ভাবছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।