শাহেদুল ইসলাম মনির, কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলায় পরিবারে অর্থ যোগাতে শিশুশ্রমের দিকে ঝুঁকছে স্কুল বিমুখ শিশুরা। মহামারি করোনা ভাইরাসে স্কুল বন্ধ থাকায় এ সুযোগে হতদরিদ্র পরিবারের শিশুরা কর্মের সন্ধানে ইজিবাইক চালাচ্ছে গ্রাম গঞ্জের অলি গলিতে। ইজিবাইকগুলোর নেই ফিটনেস, রোড পারমিট ও চালকদের নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। যে কারণে প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনা ঘটাচ্ছে ।

মাঠের কৃষক, শ্রমিক অথবা ভ্যান চালকরা শ্রমবিহীন কর্ম হিসেবে তাদের মূল পেশা বাদ দিয়ে বর্তমানে নিয়মিত ইজিবাইক চালাচ্ছেন। এ সুযোগে ঐসব পরিবারের শিশু-কিশোরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে অর্থ উপার্জনের দিক হিসেবে ইজিবাইক নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে। এতে শতকরা ৮০ জন চালকই জানেনা কি ভাবে ইজিবাইক চালাতে হয়। তারপরও তারা নিয়মিত সড়ক ছাড়াও গ্রামের রাস্তায় ৬ থেকে ৭ জন যাত্রী নিয়ে দ্রুতগতিতে বাইক চালিয়ে যাচ্ছেন।

ভোক্তভোগিরা জানান তারা প্রতিনিয়তই যানযট মাথায় নিয়ে রাস্তায় চলাচল করছে। তাদের অভিযোগ উপজেলায় চলাচলরত ইজিবাইক চালকরা কোন নিয়মশৃংখলার তোয়াক্কা না করে সড়কে ইচ্ছামত ইজিবাইক ও ব্যাটারি চালিত রিকশা চালাচ্ছে। আবার রাস্তায় ভাঙ্গাচুড়া অংশ পরিহার করে ভাল অংশ দিয়ে যেতে চায়, ফলে তারা ঘন ঘন রাস্তার এপাশ ওপাশ করে পথ চলে।

এবিষয়ে কুতুবদিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবে সভাপতি এস.কে.লিটন কুতুবী বলেন, মহামারি করোনার প্রভাবে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে কিছু সংখ্যক দরিদ্র পরিবারের শিশু-কিশোরা অর্থ উপার্জনের দিক হিসেবে ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। এতে স্কুলমুখী শিশু-কিশোর দিন দিন শ্রমের ঝুঁকির দিকে যাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

এ বিষয়ে রিক্সা চালক সমিতির সভাপতি আলী হোছাইন জানান, বিগত ১৮ বছর যাবত রিক্সা এবং ইজিবাইক চালাচ্ছেন। এটা চালিয়ে ৫ সদস্যের সংসারে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে তিনি স্বীকার করেন যে যেহারে প্রতিদিন নতুন নতুন ইজিবাইক নামছে তাতে রাস্তায় যানযট সৃষ্টি হচ্ছে। তার অভিযোগ নতুন ইজিবাইক চালকরা আইনকানুন মানেন না। কে কত বেশী আয় করতে পারে সে প্রতিযোগীতায় ব্যস্ত থাকে। উপজেলায় অল্প কয়েকটা ইজিবাইক দেখা গেলেও বর্তমানে প্রায় ৮ শতর অধিক ইজিবাইক কুতুবদিয়ার অলিগলিতে চলাচল করছে। তাদের মধ্যে অনেকে শিশু-কিশোর চালক।

সরজমিনে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায় যারা ইজিবাইক চালাচ্ছেন তাদের মধ্যে ১০/১২ বছরের কম বয়সের কিশোর প্রায় ১০ ভাগের ১ ভাগ।

নোমান নামের এক পথচারী বলেন উপজেলার অভ্যান্তরে চলাচলরত ইজিবাইক দেখলে মনে হয় এটা যেন শুধু ইজিবাইকের উপজেলা।

এব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাঃ ওমর হায়দার বলেন, ইতিমধ্যে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় যত্রতত্র ইজিবাইক দূর্ঘটনার বিষয়ে কথা উঠেছে। দ্বীপের ৬ ইউনিয়নের ইজিবাইক এবং চালকদের তালিকা করা হচ্ছে। প্রতিটি চালকদের গালায় কার্ড থাকবে। আশা করি কয়েকমাসের মধ্যে এটা শেষ করতে পারবো এবং শিশু বা অদক্ষ ড্রাইভার কাউকে পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি বলে তিনি জানান।