এম.এ আজিজ রাসেল:
আগামী ২৮ নভেম্বর কক্সবাজার পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে উপ—নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে কোমর বেধে মাঠে নেমেছে প্রার্থীরা। মন জয় করতে দিন—রাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে তাঁরা। প্রার্থীদের সরব প্রচারণায় উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে ভিআইপি ওয়ার্ড হিসেবে খ্যাত পর্যটন এই এলাকা।
সরেজমিনে ১২নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পোস্টারে পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে সর্বত্র। চা দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্র এখন নির্বাচনী আলাপ চলছে। দিন কিংবা রাত! প্রার্থীদের দেখা মিলছে বিভিন্ন পাড়া—মহল্লায়। রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা ব্যক্তিদের সাথেও তারা কুশল বিনিময় করছে এবং ভোট প্রার্থনা করছে। দিচ্ছেন নানা ধরণের প্রতিশ্রম্নতি।
জেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা যায়, ১২নং ওয়ার্ডে মোট ভোটার রয়েছে ৬৩৮৩ জন। তৎমধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৬৩৭ জন, মহিলা ভোটার ২৭৪৬ জন। ভোট কেন্দ্র রয়েছে ২টি ও নির্বাচনী বুথ রয়েছে ১৪টি। তারমধ্যে লাইট হাউজ দারুল উলুম মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে ভোটার নং ৩২০৮ জন এবং কলাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩১৭৫ জন।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, এখানে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক কাজী মোস্তাক আহমদ শামীম, জেলা আওয়ামী লীগের উপ—প্রচার সম্পাদক এম.এ মনজুর, সাবেক ছাত্রনেতা আনসারুল করিম ও শহীদুল ইসলাম শহীদ।
কাজী মোস্তাক আহমদ শামীম প্রয়াত কাউন্সিলর কাজী মোরশেদ আহমদ বাবুর বড় ভাই। এলাকায় কাউন্সিলর বাবুর ব্যাপক সুনাম রয়েছে। তিনি দায়িত্বপালন কালে এলাকার উন্নয়ন করেছেন। সদালাপি ভাল লোক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এছাড়াও রয়েছে পারিবারিক ঐতিহ্য। কাজী মোস্তাক আহমদ শামীম পাঞ্জামী প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
একই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের জেলা উপ—প্রচার সম্পাদক এম এ মনজুর প্রার্থী হয়েছেন। তিনি কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ডালিম প্রতীক নিয়ে তিনি ব্যাপক প্রচারণ চালাচ্ছেন। একজন পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে তিনি এলাকায় পরিচিত। স্থানীয়রা জানান, এম এ মনজুর একজন জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি। তিনি সব সময় মানুষের সুখে—দুঃখে ছিলেন। কোনদিন কারও ক্ষতি করেননি।
অপরদিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আনসারুল করিম প্রতীক পেয়েছেন (ব্লাকবোর্ড)। বিগত ৩ বছর ধরে তিনি মাঠে রয়েছেন। শহরব্যাপী ফ্রি—চিকিৎসা ক্যাম্প করে গরীব ও দুস্থ মানুষের মাঝে বিনামূলে ওষুধ দিয়েছেন। এ নিয়ে ব্যাপক প্রশংসিত হন তিনি। এছাড়া গণমানুষের সাথে তাঁর উঠাবসা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বনেদি পরিবারের সন্তান হওয়ায় তিনিও ভোটে ফ্যাক্টর হতে পারেন।
এছাড়া জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর জিসান উদ্দিনে ছোট ভাই শহীদুল ইসলাম শহীদ উঠ পাখি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। ইতোমধ্যে তিনিও একজন শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। জিসান উদ্দিন জিসানের জনপ্রিয়তা ও বিএনপি ভোট ব্যাংকের কারণে তাঁকেও ভাল নজরে দেখছেন অনেকেই।
প্রার্থীদের ভোট ব্যাংকের হিসেব বদলে দিতে পারে যুবলীগ নেতা ফরিদুল আলম (টেবিল ল্যাম্প) ও সোহেল আরমান (ব্রীজ)।
১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহেদ আলী সাহেদ ও সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদুল হক চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার মধ্যে এই ওয়ার্ড অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটন এলাকায় হওয়ায় এটি প্রতি সবার নজর আলাদা। তাই সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত একটি আধুনিক ওয়ার্ড বিনির্মানে যার ভূমিকা অতীতে জোরালো ছিল তাকেই সাধারণ ভোটাররা কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত করবে।
সৈকত পাড়ার বাসিন্দা হাসেম জানিয়েছেন, আমরা এলাকার বাইরে ভোট দিতে চাইনা। কাউন্সিলর অন্য এলাকার হলে আমরা নাগরিক সুবিধা যথাযতভাবে পাব না। তাই এলাকার প্রার্থীকেই নির্বাচিত
করতে চাই।
কলাতলীর বাসিন্দা মোহাম্মদ জালাল জানিয়েছেন, এই এলাকায় দুইজন শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছেন। দুইজনই পরিচ্ছন্ন প্রার্থী। তাই উন্নয়নের স্বার্থে এই এলাকা থেকে প্রার্থী হওয়া সরকার সমর্থিত প্রার্থীকে ভোট দিতে চাই। ভিন্ন প্রার্থীকে ভোট দিলে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম থেকে আমরা বঞ্চিত হব।
আদর্শগ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, এটি দলীয় নির্বাচন নয়। যিনি উপযুক্ত তাকে ভোট দিতে চাই।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।