হ্যাপী করিম,মহেশখালী:
রাষ্ট্রের নাগরিকের পরিচয়ে এখন ‘ভোটার আইডি’ অপরিহার্য। মোবাইল ফোনের সিম কেনা থেকে শুরু করে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, জমি রেজিস্ট্রি করা ও করোনা ভ্যাকসিন নিবন্ধনসহ প্রায় সব কাজেই এনআইডি’র প্রয়োজন পড়ছে। ফলে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এনআইডি সংশোধনের আবেদন ও নতুন ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের জন্য পড়েছে আবেদনের হিড়িক।

মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সকাল ৭টা থেকেই উপজেলা নির্বাচন অফিসে নতুন ভোটারের ফাইল জমা দিতে লোকজন জড়ো হতে থাকে। প্রায় ৪শতাধিক নারী-পুরুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ফাইল জমাদানের অপেক্ষায় ছিল। লাইনে দাঁড়ানো সেবাপ্রার্থীদের মাঝে ছিল না সামাজিক দূরত্ব, মুখে ছিল না মাস্ক এবং মানা হয়নি কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন থেকেও পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ভুক্তভোগীরা বলছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে ভোগান্তি কমছে না কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খেসারত দিচ্ছে নাগরিক।

তারা আরও জানান, দীর্ঘদিন ফাইল নিয়ে নির্বাচন অফিসে ঘুরাঘুরির পর সবাইকে একই দিন উপস্থিত হতে বলায় এই বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। এই অনিয়ম করেছে মহেশখালী নির্বাচন অফিস। তারা চাইলে আলাদা দিন ঠিক করে ইউনিয়ন ভিত্তিক ফাইল জমা নিতে পারতেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

সাইফুল, খালেদা, মিজানসহ কয়েকজন জানান, একাধিকবার নির্বাচন অফিসে আসার পর তাদের আজকে ফাইল জমা দেয়ার জন্য আসতে বলেছেন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়ানোর পরেও ফাইল জমা নেয়নি নির্বাচন অফিসার। তারা আরও জানান, তারা সবাই মাতারবাড়ি থেকে এসেছেন। মাতারবাড়ি থেকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে যাতায়াত ভাড়া প্রায় চার‘শ টাকা। অথচ নির্বাচন অফিসারের মনগড়া সিদ্ধান্তের কারণে ফাইল জমা না দিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের।

এদিকে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. জুলকার নাইম বলেন, ‘তথ্যগত ভুলের কারণে আজকের বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। আজকে ফাইল জমা নেয়ার পূর্বনির্ধারিত কোন সময় ছিল না। সকাল থেকেই সেবাপ্রার্থীরা ফাইল জমা দিতে জড়ো হতে থাকেন। বিরতিহীন কাজ করে প্রায় ২৫০ জনের ফাইল জমা নেয়া হয়েছে। বাকিদের আগামীকাল অফিস চলাচালীন সময়ে জমা নেয়া হবে। মূলত ৯ নভেম্বর শুধুমাত্র জরুরি ভিত্তিতে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দরকার তাদের ফাইল জমা নেয়ার কথা ছিল। এই তথ্যটি ভুলভাবে বুঝার কারণে সবাই ফাইল জমা দিতে চলে এসেছেন।’

দেশে ২০০৮ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রের যাত্রা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত জনগণের ভোগান্তি কমাতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। ফলে এনআইডি সেবাগ্রহীতাদের ইসি অফিস থেকে কাজ করিয়ে নিতে পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। চলতি বছরে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কয়েক লাখ আবেদন এখনো ঝুলে আছে ইসিতে।