নিজস্ব প্রতিবেদক:

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তপসিল মতে দিত্বীয় ধাপে কক্সবাজারের তিন উপজেলার ২১টি ইউপি নির্বাচন আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত ইউপি নির্বাচনের মধ্যে ঝিলংজা ইউনিয়নের নির্বাচনকে ঘিরে শেষ মুহূর্তে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে।

নির্বাচনের প্রার্থীরা গণসংযোগ, উঠান বৈঠকসহ চলছে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ভোট প্রার্থনা। তবে নানা কৌশলে এই ইউনিয়নে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আ.লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী সাবেক ছাত্র নেতা ও পরিশ্রমী জনবান্ধব সমাজ সেবক, তরুণ জননেতা চেয়ারম্যান টিপু সুলতান।

নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী টিপু সুলতানকে বিজয় করতে মাঠে নেমেছেন দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের শ্রেনী পেশার মানুষ। টিপু সুলতানের সমর্থনে বৃদ্ধ থেকে শুরু করে তরুণ ও যুবকরা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় প্রচার-প্রচারণা ও ভোট প্রার্থনা এবং গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে তার সমর্থক নারীরাও পিছিয়ে নেই। গণসংযোগ করার পাশাপাশি নিত্যদিন কোন না কোন ওয়ার্ডের মহল্লায় নির্বাচনী উঠান সভা করে চলেছেন তরুণ জননেতা টিপু সুলতান।

করোনা আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর সুস্থ হয়ে ফিরে গত এক সপ্তাহ ধরে ইউনিয়নের খরুলিয়া, দরগাহ পাড়া, বাংলা বাজার, লিংকরোড, কলেজ গেইট, চান্দের পাড়া, হাজীপাড়া, লার পাড়া, দক্ষিণ ডিক্কুল, লারপাড়া, বাস টার্মিনাল, বড়ছড়া এলাকাসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় এবং অলিগলিতে গণসংযোগ করে ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী টিপু সুলতান।

এদিকে, সোমবার (৮ নভেম্বর) দিনব্যাপী গণসংযোগ শেষে ওইদিন রাতে ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব খরুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরর মাঠে নির্বাচনী এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন টিপু সুলতান।

নির্বাচনী পথ সভায় আ.লীগের চেয়ায়ম্যান প্রার্থী টিপু সুলতান তার বক্তব্যে বলেন, গত ২০১১ সালের নির্বাচনে অল্প ভোটে আমি পরাজিত হয়েছিলাম। তারপরও ঝিলংজাবাসীকে ছেড়ে যায়নি। চেয়ারম্যান না হয়েও তাদের সুখে-দুঃখে ও বিপদেআপদে পাশে থেকে সেবা দিয়েছি। পরে ২০১৬ সালের নির্বাচনে আমাকে আপনারা বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছেন। এরপর থেকে ঝিলংজা ইউনিয়নে পঞ্চাশ বছরে যে উন্নয়ন হয়নি, তা গত ৫ বছরে হয়েছে। আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ৮০ শতাংশ উন্নয়ন করেছি। করোনার কারণে ২০ শতাংশ কাজ বাকী রয়েছে। এখনো কয়েক কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে পিচঢালা রাস্তা, আর সিসি ঢাইলাই রাস্ত, বহু মসজিদ-মাদ্রাসার, স্কুল ও কবরস্থানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্টান সংস্কার ও উন্নত করেছি।

গত ৫ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে কারো একটি টাকা ক্ষতি করিনি। সব সময় আল্লাহকে ভয় করে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করেছি। বউ-বাচ্চা বাসায় রেখে বহু সময় পরিষদে রাত কাটিয়ে মানুষের সেবা দিয়েছি। নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সব মানুষকে নিজের মনে করে দায়িত্ব পালন করেছি। কাউকে পর ভাবিনি। কোন মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করিনি। তবুও মানুষ হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ছোটখাটো ভুলত্রুটি যদি হয়ে থাকে আমাকে ক্ষমা করবেন। আপনাদের ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার আমার আছে। আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনের নৌকা প্রতীকে আমাকে ভোট দিয়ে অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করার সুযোগ দিন।

সোমবার সন্ধ্যায় পূর্ব খরুলিয়ায় স্থানীয় সমাজ সেবক মাহবুবুব আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পথসভায় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী টিপু সুলতান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, উন্নয়নের মার্কা নৌকা। জনতার একাগ্রতা-উচ্ছাস এরিই প্রমান বহন করে। ঝিলংজাবাসীর বিজয় সুনিশ্চিত। আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। এলাকার উন্নয়ন এবং মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই একমাত্র লক্ষ্য। আপনারা আমাকে যে ভালবাসা দেখিয়ে যাচ্ছেন তা কখনো ভূলার নয়, আমি তার জন্য এলাকার সর্বস্তরের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ। তাই আমাকে ১১ নভেম্বর বিজয় করার লক্ষ্যে এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণকে আবারো জেগে উঠতে হবে এবং সুশাসন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও একটি আধুনিক মডেল ইউনিয়ন রূপান্তরিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

চেয়ায়ম্যান প্রার্থী আরও বলেন, সমাজে পিছিয়ে থাকা ঝিলংজার ৯টি ওয়ার্ডকে জনপদের অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সাজানো হবে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোন ধরণের বৈষম্য করা হবে না। ইউনিয়নের মানুষের দূরগোড়ায় শতভাগ সেবা নিশ্চিতে যা যা করণীয় তা নিরুপণ করে সেবা দেওয়া হবে। তিনি মাদক ও সস্ত্রাস মুক্ত একটি মডেল ইউনিয়ন উপহার দিতে এবারের নির্বাচনে ঝিলংজাবাসীকে তাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করার জন্য আহবান জানান।

পথ সভায় বিভিন্ন বক্তারা বলেছেন, ঝিলংজার ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের সাথে নৌকার প্রার্থী টিপু সুলতানের পরিবারটি জড়িয়ে আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জেনেশুনে সবকিছু দেখে নৌকার টিকেট দিয়েছেন। অত্যন্ত ভদ্র ও নম্র টিপু সুলতান যদি চেয়ারম্যানের দায়ীত্ব পালনকালে কোন ভুল বা অন্যায় করতো তার জন্য ভোট চাইতে আসতাম না। তিনি ইতিমধ্যে ঝিলংজার জনসাধারণকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে ও গরীব কৃষকদের তাদের ক্ষেতের ফসলি ফলন বাঁচাতে বাঁকখালী নদীর ভাঙ্গন রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের শত কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের বরাদ্দ এনে কাজ শেষ করেছেন। টিপু যদি পুরনায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন, ঝিলংজার আপমর জনসাধারণ মডেল ইউনিয়ন হিসেবে আলোর মুখ দেখতে পারবেন। নয়টি ওয়ার্ডের সম্পূর্ণ চিত্র পাল্টে যাবে। তার নিষ্টা, সততা, কর্মদক্ষতা যাচাই করে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে সঠিক কাজে সাহসী ভুমিকার জন্য ঝিলংজার ভোটারগন তাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বক্তারা