রাজু দাশ ,চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় দেশি-বিদেশি ফুটবল, ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে তরুণ ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ সিএনজি,অটো চালক,ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। কেউ রাতারাতি জুয়ার টাকায় নিজেকে পরিবর্তন করছে, কেউ বা নিঃস্ব হচ্ছে। বাদ পড়েনি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সর্বসাধারন মানুষ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশি-বিদেশি ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা যেমন- আইপিএল, বিপিএল, পিএসএল, এসপিএল, সিপিএলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিরিজ এবং ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিসহ বিবিধ খেলায় এক শ্রেণির অনলাইন জুয়াড়ি জুয়া খেলে লাখ লাখ টাকা হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। প্রতি ২০ ওভারে রানের ওপর এবং বলে বলে ধরা হচ্ছে টাকার বাজি। কোন খেলোয়াড় বেশি রান করবে, কে বেশি চার মারবে এবং কোন দল জিতবে এসবের ওপর প্রতি মুহূর্তে চলছে বাজি ধরা। এভাবে প্রতিদিন উপজেলায় লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হচ্ছে বলে বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে।

বিভিন্ন পাড়া মহল্লা, চায়ের দোকান, সেলুন, লন্ড্রি এমনকি,বাসা বাড়ি, ক্লাব যেখানেই টিভি সেখানেই চলছে বাজি ধরা। এছাড়া মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে বেট ৩৬৫ নামের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে
টিভি দেখে সহপাঠীদের সাথে ফোন,হোয়াটসআপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমেও বিভিন্ন অঙ্কের টাকা বাজিধরা হয়। এভাবে ক্রিকেট জুয়ার ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় তরুণ ও যুব সমাজ। এসব জুয়াড়ি কৌশলগত কারণে অনেকটাই থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

সচেতন অভিভাবকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ পারে যুব সমাজকে বিপথগামী ও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে।

নাম অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান,সাধারণ মানুষের এই আবেগকে পুঁজি করে সামাজিক পর্যায়ে এখন চলছে ক্রিকেট খেলা নিয়ে জুয়া। এই বাজির পরিমাণ ১শ’ টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকা পর্যন্ত ঠেকছে। এতে সর্বশান্ত হচ্ছে অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ। খেলাধুলাকে ঘিরে বাজি ধরা হচ্ছে ম্যাচের কোনো একটি দলের জয়ী হওয়া, বল প্রতি ছক্কা, চার, উইকেট নেয়াকে কেন্দ্র করে। এছাড়াও কোন ওভারে কত রান হবে, কত উইকেট পড়বে, শেষ বলে কত রান হবে, টসে কোন দল জিতবে, কোন খেলোয়ার বেশি রান করবে, কে বেশি উইকেট পাবে, এমন নানা বিষয়েও চলছে জুয়া।

ক্রিকেট জুয়ার আসরে সর্বশান্ত হচ্ছে এলাকার চাকরিজীবী, দিন মজুরসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাজি ধরার প্রবণতা চলতে থাকলে সামাজিক অবক্ষয় ছাড়াও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে যুব সমাজ। তাই যুগোপযোগী আইন তৈরির পাশাপাশি, সমাজে সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ সংশ্লিষ্টদের।

আর পাড়া মহল্লার সড়কের ধারে অবস্থিত কোন প্রতিষ্ঠানে খেলা দেখার ছলে কোন ধরনের জুয়া আসর বসতে না পারে, সেজন্য প্রশাসনের নজরদারী বাড়ানোর প্রয়োজন।