নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত ৫ অক্টোবর রাতে কক্সবাজার শহরের প্রবেশদ্বার লিংকরোডে গুলিবর্ষণের ঘটনাটি ‘তৃতীয় পক্ষ’ ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন ঝিলংজার ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী লিয়াকত আলীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার। তার দাবি, লিয়াকত আলী ও কুদরত উল্লাহর মধ্যে বিরোধ লাগিয়ে দিয়ে একটি পক্ষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ও ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ঘটনা সম্পর্কে আমরা মোটেও অবগত ছিলাম না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন লোক থেকে ঘটনাটি জেনেছি। যা আমাদেরও দুঃখিত, বিস্মিত করেছে। নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
রবিবার (৭ নভেম্বর) সকালে বিসিকস্থ লিয়াকত আলীর নির্বাচনী অফিসে সংবাদ সম্মেলনে কথাগুলো বলেছেন সহধর্মীনি জেসমিন আক্তার।
গুলিবর্ষণের ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয় ও দুঃখজনক মন্তব্য করে জেসমিন আক্তার বলেন, অনাকাঙ্খিত ঘটনাকে ইস্যু করে একটি পক্ষ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমার স্বামীর উপর ঘটনার দায় চাপিয়ে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আমি মনে করি, একটি গোষ্ঠী আমার স্বামীর জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে কুদরত উল্লাহ ও তার ভাইয়ের উপর গুলিবর্ষন করে তার দায় আমার স্বামীর উপর চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, ১১ নভেম্বরের নির্বাচন ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা চলছে। ইতোমধ্যে ভোটের সুন্দর একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগের আগ্রহ নিয়ে বসে আছে। ঠিক এমন সময়ে ঘটে গেলো একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা।
গত ৫ নভেম্বর রাত ১০ টার দিকে কে বা কারা মেম্বার পদপ্রার্থী কুদরত উল্লাহ সিকদার ও তার অপর ভাই জহিরুল ইসলাম সিকদারকে গুলিবর্ষণ করে পালিয়ে যায় বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। যেটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। নেক্কার জনক ঘটনায় আমি নিন্দা জানাচ্ছি। সে সঙ্গে তদন্ত পূর্বক ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করার আহবান করছি।
সুষ্ট নির্বাচনী পরিবেশকে নষ্ট করে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ফায়দা হাছিলের উদ্দেশ্যে একটি চক্রান্তকারী গোষ্ঠী ঘটনা ঘটাতে পারে, আগেভাগে এমন আশঙ্কা করেছিলেন আমার স্বামী লিয়াকত আলী। আশঙ্কার কথা বিস্তারিত লিখে নির্বাচন কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার, থানার ওসি, র‌্যাব প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছিলেন তিনি। কুদরত উল্লাহ শুধুমাত্র আমার স্বামীর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। তার সাথে আমার স্বামী এবং আমাদের পরিবারের কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তাকে ও তার ভাইকে হত্যার চেষ্টা করার মতো এমন জঘন্য কাজে আমার স্বামী ও আমার পরিবার কোনোভাবেই জড়িত নয়। দুই প্রার্থীর মধ্যে বিরোধ লাগিয়ে নির্বাচনী পরিবেশকে নষ্ট ও পূর্বক শত্রুতা হাছিল করতে তৃতীয় কোন পক্ষ এমন ঘটনা ঘটাতে পারে। যা নিরপেক্ষ তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব, লিংরোড এলাকাটি সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এখানকার সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করলে ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করা সম্ভব হবে। প্রকৃত হামলাকারীদের গ্রেফতার করে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উম্মোচন করার দাবী জানাচ্ছি।
জেসমিন আক্তার বলেন, ঘটনার পর থেকে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরী করেছে প্রতিপক্ষরা। আমাদেরসহ সাধারণ মানুষকে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। যেকোন সময় আমাদের পরিবারের উপর আরোও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। আমরা চরম হুমকির মুখে।
দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে অনুরোধ, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের খোঁজে বের করুন। ঘৃণিত ও বর্বরোচিত ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি। এ ধরণের জঘন্য ঘটনায় যেন নিরপরাধ কাউকে জড়িত না করে, বিনা তদন্তে মামলায় আমাদের হয়রানি না করতে প্রশাসনের নিকট বিনীত অনুরোধ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে চাচা মোক্তার আহমদ, দাদা মনির আহমদ, মা ছেনুয়ারা বেগমসহ এলাকার শতাধিক নারীপুরুষ উপস্থিত ছিলেন। শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেছে তারা।