বার্তা পরিবেশকঃ
উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী জনপদ বালুখালী গ্রামে অবস্থিত  ডাকঘরটি দীর্ঘদিনেও কোন মেরামত ও সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে বিভিন্ন জনগুরুত্বপুর্ণ ও সরকারি ডকুমেন্ট নষ্ট হওয়ার পাশপাশি অস্থিত্বহীন হয়ে পড়েছে। এই ডাকঘরটি বর্তমানে গোয়ালঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত তথ্য জানা যায়, ১৯৬০সালে বালুখালী ডাকঘরটি স্থাপিত হয়। উখিয়া সদরে অবস্থিত প্রধান ডাকঘরের নিয়ন্ত্রিত শাখা ডাকঘরটি বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছে বালুখালী গ্রামের হামিদুল হক মাস্টার এবং মরহুম রিয়াজুল হক মাস্টারের মেয়ে। এই ডাকঘরটি অধ্যুষিত এলাকা হচ্ছে উত্তরে কাস্টমস এলাকা পূর্বে ঘুনধুম এলাকা দক্ষিনে ধামনখালী,রহমতে বিল,থ্যাংখালী,মোছারখোলা,তেলখোলা,
তাজনিরমারখোলা,পুটিবুনিয়া,গয়ালমারা,পশ্চিম পালংখালী,মধ্যম পালংখালী,ফাড়িরবিল,নলবনিয়া ও আঞ্জুমানপাড়া ও পশ্চিম বালুখালী ও মইন্যারঘোনা এলাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চিঠি পত্র আদান প্রদান এর নির্ভরশীল ব্যবস্থা হচ্ছে সরকারি ডাকঘরটি।

এই ডাকঘরটিতে কোন ধরনের মেরামত ও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।একদিকে সরকার প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।অন্যদিকে এলাকার জনসাধারণ দূর্ভোগ এর শিকার হচ্ছে। উত্তর বালুখালী সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির সভাপতি হাজী রোশন আলী জানান এই ডাকঘরটি পাক আমলে স্থাপিত হয়েছিল। তখন থেকে প্রয়াত মেম্বার আলী হোসন ডাকঘরটি পরিচালনা করে আসছিল পরবর্তীতে তাহার সহায়ক হিসেবে ছিলেন প্রয়াত রিয়াজুল হক। তারা দুইজনই মারা যাওয়ার ফলে উক্ত ডাকঘরের সু-ব্যবস্থাপনার সংকট হয়ে পড়ে। বালুখালী পুরাতন স্টেশনে জরাজীর্ণ ডাকঘরটির স্থাপনা প্রত্যক্ষ করা গেলেও কোনধরনের কার্যক্রম বিদ্যমান নেই।এলাকার অনেকে জানান এই ডাকঘরটির কার্যক্রম পরিচালনা হয় হামিদুল হক মাস্টারের বাসায় ও প্রয়াত রিয়াজুল হক মেয়ের বাসায়।দেশ বিদেশ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চিঠি এলাকার লোকজন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে আসলেও সঠিক ভাবে বিলি করা হয় না গ্রহিতারাও তাদের খুজে পায় না। বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশের আদলে সারাদেশব্যাপী ডিজিটালাইজ করলেও দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অবহেলার কারনে এখনো ডাকঘরটির মানোন্নয়ন হয়নি।বর্তমানে বৃহত্তর পালংখালীতে দেড় হাজার অধিক সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

অন্যদিকে এ ডাকঘরে সংরক্ষিত সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট ব্যক্তিগত বাসায় মজুদ করে রাখায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে উক্ত ডাকঘরের নিয়ম-শৃংখলা ও ব্যবস্থাপনা ফিরিয়ে আনতে এলাকার সচেতন মহলের পক্ষে বালুখালী নবারুন সংস্থার সভাপতি নুরুল আমিন ছিদ্দিক বান্দরবানের ডেপুটি পোষ্ট মাস্টারের বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে তিনি জানান।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পোষ্ট অফিসটি নাম সর্বস্ব। প্রথমে দেখে মনে হয় যেন এটি একটি গোয়াল ঘর। কিন্তু কাছাকাছি গিয়ে দেখা গেল ডাকঘর লিখানো একটি ছিঁকা। যে কেউ ভিতরে প্রবেশ করতে পারে। দরজা, জানালার ফটক থাকলেও নেই কোন দরজা,জানালা। ২টি ভাঙ্গা টেবিল, ১টি চেয়ার রয়েছে এই জরাজীর্ণ ঘরে। এই অফিসের ল্যাপটপ থেকে শুরু করে যাবতীয় মালামাল সামগ্রী কর্মকর্তাগনের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহৃত হয়। এ বিষয়ে আলাপ করার জন্য কর্মকর্তাগণের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।অবিলম্বে উক্ত ডাকঘরটি সংস্কার করার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয় এর প্রতি এলাকাবাসী জোর দাবী জানান।