অনলাইন ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভবানীপুর উপনির্বাচনে ৫৮ হাজার ৮৩৫ ভোটে জয়ী হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে জয়ের হ্যাটট্রিকও করলেন তিনি। এক ভোট, অনেক রেকর্ড। এক দিকে যেমন মমতা নিজের জয়ের রেকর্ড ভেঙেছেন, তেমনই এই কেন্দ্রের সব ওয়ার্ডেই তৃণমূল জিতেছে বলে দাবি করেছেন মমতা। আর এর জন্য ভবানীপুরের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতাও স্বীকার করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গোটা দেশের নজর ছিল ভবানীপুর কেন্দ্রের দিকে। গণনার শুরু থেকেই এগিয়ে ছিলেন মমতা। গণনা যত এগিয়েছে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের থেকে তাঁর ভোটের ব্যবধান তত বেড়েছে। ২১ রাউন্ড শেষে বিশাল ভোটে জয় পেলেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৮৫ হাজার ২৬৩। প্রাপ্ত ভোটের হার ৭১.৯১ শতাংশ। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিজেপি-র প্রিয়ঙ্কা পেয়েছেন ২৬ হাজার ৪২৮ ভোট। তাঁর প্রাপ্ত ভোটের হার ২২.২৯ শতাংশ। ভবানীপুরে মোট ৭০২টি পোস্টাল ব্যালটের মধ্যে মমতা ৫৫৪, প্রিয়ঙ্কা ১০৪ এবং শ্রীজীব ২৫টি ভোট পেয়েছেন।

২০১১ উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর জয়ের ব্যবধান ছিল ৫৪ হাজার ২১৩। এবার সেই ব্যবধান টপকে গিয়ে মমতা ৫৮ হাজার ৮৩৫ ভোটে। ২০১১ সালের থেকে মমতার জয়ের ব্যবধান বাড়াটা নিঃসন্দেহে বিরাট বড় সাফল্য। কারণ, সেদিন বিপক্ষে মোদি-শাহর (Amit Shah) বিজেপির মধ্যে প্রবল পরাক্রমী প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। তখন কংগ্রেসও ছিল তৃণমূলের সঙ্গে। তাছাড়া, সেসময় সদ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, আজকের মতো প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার লেশমাত্র সেদিনের নির্বাচনে ছিল না। ২০১৬ সালে মমতা যখন ভবানীপুর থেকে জিতলেন তখন ভোট পড়ে ১,৩৭,৪৭৫। মোট ভোটারের ৬৬.৮৩ শতাংশ। সেসময় ২৬ হাজার ২৯৯ ভোটে কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সীকে হারিয়েছিলেন মমতা। গত এপ্রিল মাসে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় যখন এই কেন্দ্রে জিতলেন, তখন ভোট পড়েছিল ১,২৭,৫৩৬। মানে ৬১.৭৯ শতাংশ। শোভনদেব জিতেছিলেন ২৮,৭১৯ ভোটে। এবারে ভোট পড়েছে মাত্র ৫৭ শতাংশের সামান্য বেশি। অর্থাৎ আগেরবারের থেকে অনেকটাই কম। তা সত্ত্বেও তৃণমূল নেত্রীর জয়ের ব্যবধান আগের সব নির্বাচনের থেকে হাজার হাজার বেশি।

অর্থাৎ শেষবার মমতা যখন ভবানীপুর (Bhabanipur By-Election) থেকে প্রার্থী হন, সেসময় যা ব্যবধান ছিল, এবারে তার দ্বিগুণ ব্যবধানে জয় পেলেন তৃণমূল নেত্রী। সেদিক থেকে দেখতে গেলে মমতা নিজেই নিজের অতীতের রেকর্ড ভাঙলেন।

এদিন জয়ের পর মমতা বলেন, “সারা বাংলা খুব আঘাত পেয়েছিল যখন সব ভোটে জিতেও একটায় জিততে পারিনি। সেটা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। সেটা নিয়ে এখন কিছু বলছি না। অনেক চক্রান্ত চলেছিল। সব চক্রান্ত জব্দ করে দিয়েছে বাংলার মানুষ, ভবানীপুরের মানুষ। ভবানীপুরের মানুষের কাছে আমি চিরঋণী।” -নিউজ নেস্ট