পেকুয়া প্রতিনিধি:

সারাদেশের ন্যায় পেকুয়া উপজেলার ৬ ইউনিয়নে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হবে ৩য় ধাপে। ইতোমধ্যে ২য় ধাপের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

আসন্ন ওই ভোটে সদর ইউপিতে নৌকার মনোনয়ন দৌঁড়ে রয়েছে এগিয়ে রয়েছেন পেকুয়া উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কাশেম ও উপজেলা আ’লীগের সহসভাপতি সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম। এছাড়াও প্রবাসী আ’লীগ নেতা ওমর রিয়াজ চৌধুরী, ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন বাবর মুকুল ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নাসির উদ্দিন বাদশা নৌকার মনোয়ন চাইবে এমন মতামত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হয়েছে।

ইতোমধ্যে যার যার মত করে তারা নৌকার মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রীয় আ’লীগ ও জেলা আ’লীগ বরাবর তদবীর চালিয়ে যাচ্ছে।

সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বিগত সময়ে পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে অল্পভোটের ব্যবধানে হেরে যান। এরপর পেকুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা নিয়ে ভোট করে হেরে গেলেও সুষ্ঠুভোটে সহায়তা করায় সুনাম অর্জন করেন। বিগত নির্বাচন গুলোতে হেরে গেলেও দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন সমস্যায় এগিয়ে আসার পাশাপাশি সাধারণ জনগণের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। ইতোমধ্যে নিজ আর্থিক সহায়তায় ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সাধারণ জনগণের প্রশংসা পেয়েছেন।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আ’লীগের এ নেতা বিএনপির সরকার সময়ে অহরহ মামলার আসামী হয়ে বহুবার কারাভোগ করেছেন। নির্যাতিত হয়ে দিনের পর দিন কষ্ট ভোগ করেছেন। এরপর বর্তমান সরকার আমলে এসে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের আস্থাভাজন হয়ে উঠেন। পেকুয়া উপজেলা আ’লীগকে সুসংগঠিত করে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করেন। সর্বশেষ আবুল কাশেমের নেতৃত্বে পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউপির নির্বাচনে আ’লীগের তৃণমূল কর্মী সমর্থক থেকে শুরু করে সিনিয়র নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করে সুষ্ঠুভোটে নৌকার বিজয় নিশ্চিত হয়। ওই নির্বাচনের পর উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম তৃণমুল নেতাকর্মীদের কাজ থেকে প্রশংসা পেয়েছেন। যার কারণে আগামী ইউপি নির্বাচনে পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী হিসাবে আবুল কাশেমকে চাই তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আরো বলেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে একাধারে তিন বছর ও ১৬

মাস এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রায় ১৮ মাস মিথ্যা মামলায় কারাভােগ করেন। এমনকি ২বার ডিটেনশান সহ ১৯টি রাজনৈতিক হয়রানীমূলক মামলায় তিনিসহ ছয় ভাই কারাভােগ করেন।

এছাড়াও আবুল কাশেমের রাজনৈতিক জীবনও সম্মৃদ্ধ। পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মৌলভী পাড়ার মরহুম নুরুল আলমের সন্তান। ১৯৯০ সালে বিএসসি পাশ করা আবুল কাশেম ১৯৮৭-১৯৯৫ ইং পর্যন্ত অবিভক্ত চকরিয়া থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপাতি এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি, ১৯৯৬-১৯৯৯ ইং পর্যন্ত পেকুয়া সাংগঠনিক থানা ছাত্রলীগের আহবায়ক, ১৯৯৯-২০০২ ইং পর্যন্ত থানা ছাত্রলীগ সভাপতি এবং কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সহ- সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩-ইং সালে কারাগারে থাকাবস্থায় পেকুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ২০০৭-২০১২ইং সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক ও ২০১২ ইং সালের ১৩ ডিসেম্বর কাউন্সিলে সর্বোচ্চ ভােট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে অদ্যবধি দায়িত্ব পালন করছেন। সদ্য বিলুপ্ত হওয়া পেকুয়া উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়াও জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজ পরিচালনা কমিটি ও পেকুয়া আনােয়ারুল উলুম আলিম মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে। পেকুয়া সরকারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব রয়েছেন।

আবুল কাশেমকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে উপজেলা আ’লীগের সহসভাপতি আবুল শামা শামীম, সাইফুদ্দিন খালেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মফিজুর রহমান, সদর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আজম খান, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বারেক ও শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোছাইন বলেন, আবু্ল কাশেম পেকুয়ার আ’লীগকে সংগঠিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টার কারণে তৃণমূলে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এছাড়াও বিএনপি সরকার আমলে দিনের পর দিন নির্যাতন আর জেল জুলুমের শিকার হলেও দল থেকে বিচ্ছুতি হয়নি। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সদর ইউনিয়নবাসী তাঁকে সর্বোচ্চ ভোট দিয়েছিলেন। যার কারণে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পেকুয়া সদর ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী হিসাবে আবুল কাশেমকে মনোনয়ন দিলে দীর্ঘদিন বিএনপির দখলে থাকা আসনটি উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

অপর নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশি উপজেলা আ’লীগের সহসভাপতি সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম এর আগেও স্বতন্ত্রভাবে সদর ইউপিতে নির্বাচন করেছেন। জেতার মত কাংঙ্খিত ভোট না পেলেও সৎ ব্যক্তি হিসেবে অধিক পরিচিত। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে তেমন যোগাযোগ না থাকায় নৌকার মনোনয়ন পিছিয়ে রয়েছে এমন মন্তব্য দলীয় নেতাকর্মীদের।

পেকুয়া উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সদর ইউপির নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশি আবুল কাশেম সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করে বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মী ও দলীয় সিনিয়র নেতারা চাচ্ছেন তিনি যেন সদর ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশি হয়। তারপরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাকেই নৌকার মনোনয়ন দিবেন তার প্রতি পুরো সমর্থন ও তাকে জিতিয়ে আনতে কাজ করে যাবো।