চকরিয়া সংবাদদাতা:
চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হলেও নির্বাচন পরবর্তী বিভিন্নস্থানে বিজয়ী ও বিজিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে বিজিত প্রার্থী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. বশিরুল আইয়ুবের কর্মী-সমর্থক নারী-পুরুষদের ওপর সশস্ত্র হামলা, বাড়িঘরে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজয়ী প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এমনকি রাতের আঁধারে বাড়ি লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ারও অভিযোগ করেছেন ওই ওয়ার্ডের বিজিত প্রার্থী বশিরুল আইয়ুব।

এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল চারটার দিকে পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের তরছঘাটা স্টেশনের কাছে হাজারো নারী-পুরুষ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করে।

কর্মসূচী থেকে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়, নির্বাচন পরবর্তী হামলাসহ এলাকার শান্ত পরিবেশকে যারা অশান্ত করে তুলেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে। একইসাথে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচীতে স্থানীয় নারী-পুরুষেরা বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলেও নির্বাচনের দিন গত সোমবার রাত থেকে অদ্যাবদি টিম হানিফ, বিএনপি নেতা শাহজাহান মনির, জুয়াড়ি সেলিম, রফিক, ইমনসহ একদল সশস্ত্রভাবে মোটর সাইকেলের বহর নিয়ে এলাকার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তুলেছে। যারা বিজিত প্রার্থী বশিরুল আইয়ুবের কর্মী-সমর্থক হিসেবে কাজ করেছে তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা ও বাড়িঘরে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।

এ সময় তিন নম্বর ওয়ার্ডের বিজিত প্রার্থী পাঞ্জাবী প্রতীকের মো. বশিরুল আইয়ুব বলেন, ‘ভোটের মাঠে হারজিত রয়েছে। তাই আমি পরাজিত হলেও তা মেনে নিয়েছি। পরাজয়ের কারণে আমার কর্মী-সমর্থকেরা হতাশ হলেও তাদের বারণ করে দিয়েছি কোন ধরণের অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি না করতে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ভোটের দিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকলেও রাতের পর থেকে আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা ও বাড়িঘরে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে বিজয়ী প্রার্থীর লোকজন। এই বিষয়ে আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা এবং স্মারকলিপিও দিয়েছি।’

কর্মসূচীতে আরো বক্তব্য রাখেন পৌরসভা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ধলু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেফায়েতুল কবির বাপ্পী, মৎস্যজীবী লীগ নেতা আবদুল হামিদ, হামলার শিকার বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, নির্বাচন পরবর্তী পৌরসভার কোথাও যাতে অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে সেজন্য নির্বাচনের পরদিন পুলিশ ও বিজিবি মাঠে ছিল। পরবর্তীতে পুলিশ বেশ তৎপরতা চালাচ্ছে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে।

তিন নম্বর ওয়ার্ডের যে ঘটনার কথা বলা হচ্ছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদি তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হবে। শান্ত পরিবেশকে কোনভাবেই অশান্ত করতে দেওয়া হবে না।