মহেশখালী সংবাদদাতাঃ
কুতুবদিয়ার লেমশীখালীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম রেজার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি অবমাননার অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে ইউনিয়নের হাবিব হাজীর পাড়া তিন রাস্তার মাথা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল করিম রেজার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচন সমন্বয়কারী জয়নাল আবেদীন সুনু বাদী হয়ে ৩০ জনের বিরুদ্ধে কুতুবদিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এজাহারে ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রধান আসামি লেমশীখালী ইউপি নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আকতার হোছাইন (৬০)। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এবং কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি।

আকতার হোছাইন গতবারের ইউপি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

অন্যান্য আসামিরা হলেন- আকতার হোছাইনের ভাই জাকের হোছাইন (৫৫), কর্মি-সমর্থকদের মধ্যে হুমায়ুন কবির (৪৫), সাইফুদ্দিন মানিক (২৫), দিদারুল হক (৪২), খোরশেদ আলম (৪৪), মাহমুদুল করিম (৪০), দিলদার আলম (৩৫), মোহাম্মদ আলমগীর ওরফে আলমগীর ডাকাত (৪০), মোহাম্মদ শাহজাহান (৪৫), মোহাম্মদ হাছান ওরফে মাস্টার হাছান (৪০), আবুল বশর (৪২)।

থানায় দায়ের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ইউপি নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আকতার হোছাইনের কর্মি-সমর্থকরা এলাকায় আচরণ বিধি লংঘন করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এ নিয়ে তারা মহেশখালী, চকরিয়া ও পেকুয়া থেকে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ভাড়াও করেছে। এসব সন্ত্রাসীরা এলাকায় প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে গালিগালাজ করে ত্রাসের সৃষ্টি করেছে। এতে প্রতিদ্বন্ধি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল করিম রেজার কর্মি-সমর্থকরা ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। গতবারের ইউপি নির্বাচনেও আকতার হোছাইনের কর্মি-সমর্থকরা এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি জয়লাভ করেছিল। যেটার ধারাবাহিকতা এখনো অব্যাহত রেখেছে।

বাদী জয়নাল আবেদীন সুনু বলেন, এবারের ইউপি নির্বাচনে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল করিম রেজা’র নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন জয়নাল আবেদীন সুনু। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার জন্য তার উদ্যোগে লেমশীখালী ইউনিয়নের হাবিব হাজীর পাড়া তিন রাস্তার মাথা সংলগ্ন জনৈক শওকতের দোকানের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে একটি কার্যালয় চালু করা হয়। কার্যালয়টিতে নির্বাচনী পোস্টার সাটানোর পাশাপাশি টাঙ্গানো হয় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি।

“ বুধবার রাত ৯ টায় হাবিব হাজীর পাড়া রাস্তার মাথায় স্থাপিত ওই নির্বাচনী কার্যালয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল করিম রেজার সমর্থনে পথসভা করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। পথসভা শেষ হওয়ার পরপরই প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী আকতার হোছাইনের কর্মি-সমর্থকরা সশস্ত্র মহড়া শুরু করে। এতে এলাকায় প্রতিপক্ষ নৌকার প্রার্থীর কর্মি-সমর্থকদের মাঝে ভিিত ছড়িয়ে পড়ে। ”

জয়নাল আবেদীন সুনু বলেন, “ এক পর্যায়ে গভীর রাত ৩ টায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আকতার হোছাইনের কর্মি-সমর্থকরা দা, ছুরি, লাঠি ও কেরোচিনসহ নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রবেশ করে। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি নামিয়ে ভাংচুর চালায় এবং অফিসে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে অফিস ভাংচুর ও আগুন লাগার খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম রেজা রাতেই ঘটনাস্থত পরিদর্শন করেন। ”

এ ঘটনার পর থেকে লেমশীখালীতে প্রতিদ্বন্ধি দুই ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মি সমর্থকদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে কুতুবদিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার জানান, খবর পেয়ে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।