মোহাম্মদ ফারুক, পেকুয়া:
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্টিত হচ্ছে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার। নির্বাচনে ৬জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করলেও আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এম শহিদুল্লাহ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণে মূল লড়াই হবে নৌকার প্রার্থী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর সাথে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মোসলেম উদ্দিনের।

ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রচারণার কারণে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে তিনি নির্বাচনী সভা করছেন সেখানে শতশত মানুষ তার পক্ষে স্লোগান ধরছেন। দলীয় সমর্থক ছাড়াও সাধারণ মানুষ তার পক্ষে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।

অপর দিকে কৌশল অবলম্বন করে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোসলেম উদ্দিন। ভোট সুষ্ঠু হলে জয়লাভ করবেন এমন আশার কথা ভোটারদের মাঝে প্রচার করছেন। তার পক্ষে বিএনপি সমর্থিত নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছেন।

তবে একটি নির্বাচনী প্রচারণায় নৌকার পক্ষে জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর পদসভায় উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি বর্তমান উপদেষ্ঠা কমিটির সদস্য সাবেক চেয়ারম্যান রমিজ উদ্দিন আহমেদ ও উপজেলা জামাতের সাবেক সেক্রেটারী টৈটং ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল কবির। ওই সময় তারা নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে বলেন, জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী টৈটং ইউনিয়নকে সন্ত্রাস ও ডাকাতমুক্ত করেছে। অতীতের চাইতে শতভাগ বেশি উন্নয়ন করেছে জাহেদুল ইসলাম। তাই জাহেদুল ইসলামকে আবারো বিজয়ী করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

এদিকে বিএনপি ও জামাতের এই দুই নেতা এক সাথে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে কেউ তাদেরকে সাধুবাদ আবার কেউ তাদেরকে দলের সাথে প্রতারণা করেছে এমন মন্তব্য করেছেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রবীণ বিএনপি নেতা সাবেক চেয়ারম্যান রমিজ আহমদ বলেন, বিএনপি থেকে কোন ধরণের প্রার্থী দেয়া হয়নি। স্বতন্ত্রভাবে কেউ করে থাকলে তাতে আমার করার কিছুই নাই। বিগত নির্বাচনের সময় মোসলেম উদ্দিন আমার সাথে বেঈমানি করেছে। সরাসরি আমার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ভোটে হারিয়ে দিয়েছে। তার পক্ষে বেশিরভাগ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের অবস্থান নাই।

এছাড়াও বিগত ৫ বছরের শাসন আমলে জাহেদুল ইসলাম দলমত নির্বিশেষে কাজ করে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এক সময়ে টৈটংয়ে ডাকাত ও সন্ত্রাসীদের কারণে আতংকের এলাকা ছিল। জাহেদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ডাকাত-সন্ত্রাসমুক্ত এলাকায় সাধারণ জনগণ শান্তিতে বসবাস করেছেন। তাই নৌকা নয় ব্যক্তি জাহেদকে পছন্দ করে তার পক্ষে ভোটের ময়দানে আছি। আশা করি জাহেদ বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন।

পেকুয়া উপজেলা জামাতের সাবেক সেক্রেটারী নুরুল কবির এ প্রসঙ্গে বলেন, নৌকার পক্ষে অবস্থান নেয়ার কথাটি সত্য নয়। ধনিয়াকাটা স্টেশনের নির্বাচনী প্রচারণার সময় আমি একটি কাজে বাজারে গেলে নৌকার কিছু সমর্থক আমাকে জোর করে তাদের অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) পেকুয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোছাইন বলেন, মোসলেম উদ্দিন বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী। আর রমিজ উদ্দিন আহমেদ উপজেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। তিনি কোনভাবে নৌকার প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না। এটা সংগঠন বিরোধী কাজ।