সিবিএন ডেস্ক:
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছেন না সাড়ে ১২ লাখ গাড়িচালক। এমন অবস্থায় আগামী অক্টোবরে ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড ছাপার কাজ শুরু করবে সেনাবাহিনী পরিচালিত বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ)। ছাপার দিন থেকে শুরু করে আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ১২ লাখ ৪৫ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)’র পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) শীতাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, আটকে থাকা ১২ লাখ ৪৫ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাপানোর জন্য বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এসব কার্ড ছাপা শেষ হবে। গত ২৯ আগস্ট সেনাবাহিনীর সঙ্গে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

আগামী বছরের মার্চের মধ্যে সাড়ে ১২ লাখ স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাপানোর কাজ হাতে নিয়েছে বিআরটিএ। একই সঙ্গে আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি সাড়ে ১২ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরণও করতে চায়।

বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মাহবুব ই রব্বানী বলেন, ১৫ থেকে ২০ দিন পর স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সের কার্ড ছাপার কাজ শুরু হচ্ছে। এজন্য বিএমটিএফ’র সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে পেন্ডিং সব ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

এদিকে নতুন করে যারা ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করবে তাদের লাইসেন্স সরবরাহ করবে মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স। জানা গেছে ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহের জন্য বিআরটিএ’র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স। গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করার কথা ছিল প্রতিষ্ঠানটির। কিন্তু করোনার সংক্রমণের কারণে প্রতিষ্ঠানটি দুদফায় সময় বাড়িয়ে নেয়।

উন্মুক্ত (আন্তর্জাতিক) দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার লক্ষ্যে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে বিআরটিএ চুক্তি করে।

২০১১ সালের নভেম্বর থেকে স্মার্ট লাইসেন্স দেওয়া শুরু হয়। বিগত পাঁচ বছর লাইসেন্স সরবরাহে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু এরপরই বাড়তে থাকে সমস্যা। শুরু থেকে স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করে আসছিল বিআরটিএ’র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে বিআরটিএ’র চলতি বছরের ২২ জুন পর্যন্ত চুক্তি ছিল। এই চুক্তি মধ্যে ১৫ লাখ লাইসেন্স সরবরাহ করার কথা ছিল প্রতিষ্ঠানটির। কিন্তু করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

তবে বিআরটিএ বলছে, পুরনো প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেড নতুন প্রতিষ্ঠান মাদ্রাজ সিকিউরিটিজ প্রিন্টার্সের কাছে গ্রাহকদের তথ্য হস্তান্তর করেনি। আটকে থাকা সাড়ে ১২ লাখ লাইসেন্স সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে এমন সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় কিছুদিন আগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছিলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানে বিলম্ব আমাদের সব অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে। তাই কোনোভাবেই আর বিলম্ব করা যাবে না।