সিবিএন ডেস্ক:
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বাংলা শেখানোর প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন—তাদের নিজস্ব মাতৃভাষা শেখাতে হবে। আর বিকল্প হিসেবে ইংরেজিও শেখানো যেতে পারে।

আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) ‘পেন বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য শিক্ষা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এ মন্তব্য করেন।

আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবসের এই ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন পেন বাংলাদেশের সহ-সভাপতি অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পেন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি-আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের মাছুম বিল্লাহ, কবি ও অনুবাদক গৌরাঙ্গ মোহন্ত, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী ইশরাত জাহান উর্মি।

বক্তারা বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলা না শিখিয়ে তাদের মাতৃভাষা শেখাতে হবে। ইংরেজি না জানার কারণেও রোহিঙ্গারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী চরমভাবে নির্যাতিত হয়ে মাতৃভূমি ত্যাগ করেছে। আমারা আশা করি এই নির্যাতিত জনগোষ্ঠী যাতে দেশে ফিরে যেতে পারে সে জন্য আন্তর্জাতিক মহল যা করার তাই করবে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে গত চার বছরে আন্তর্জাতিক মহল তেমন কাজ করেনি। যারা এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে পারে তারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে রাজনৈতিক খেলা খেলছেন। তারা ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।’

রোহিঙ্গা শিশুদের মাতৃভাষা শিক্ষার জন্য বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার।

পেন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাগুলো যেভাবে রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার জন্য সহায়তা দিচ্ছে সেভাবে রোহিঙ্গাদের ফেরতের বিষয়ে তারা কাজ করছে না। রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার জন্য যতটা সহায়তা তারা করছে বাংলাদেশের শিশুদের জন্যও ততটা করছে না ‘

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা বাংলাদেশের হাতে নেই। এটা ভূ-রাজনৈতিক এবং বৈশ্বিক রাজনীতির অংশ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে তাদের শিশুদের লেখাপড়া করাচ্ছে। আমরা আশা করবো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের মানবাধিকার ফেরত পাবে। তাদের ভাষা, শিক্ষা সংস্কৃতি সব অধিকার ফেরত পাবে, নিজ দেশে দ্রুত ফেরত নেওয়া হবে।’

কবি ও অনুবাদক গৌরাঙ্গ মোহন্ত এবং সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী ইশরাত জাহান উর্মি রোহিঙ্গা শিশুদের নিজ ভাষায় শিক্ষা দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।