বাংলা ট্রিবিউন:
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং শিবিরের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৯ জনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগ।

সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে ভাটারা থানা পুলিশ তাদের আটক করে।

ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়েছে। তারা গোপন বৈঠকে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল।’

আটককৃতদের মধ্যে অন্যরা হলেন- সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা হামিদুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য আব্দুর রব, অধ্যাপক ইজ্জত উল্লাহ, মোবারক হোসাইন, ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ।

জামায়াতের বিবৃতি:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও জনাব হামিদুর রহমান আজাদসহ ১০ জনকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে তাদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন।
“জামায়াতে ইসলামী একটি নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। দেশে বিদ্যমান ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে জামায়াত জনগণের পাশে থেকে সেবা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। জামায়াতের নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের সভাপতিত্বে এক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এই বৈঠক থেকে সরকার অন্যায়ভাবে জামায়াতের ৭ জন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত অন্যান্যরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব আবদুর রব, অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ ও জনাব মোবারক হোসাইন এবং ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি জনাব ইয়াসিন আরাফাত।
দেশে এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি চলছে। সরকার দীর্ঘ এক যুগ ধরে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার কেঁড়ে নিয়েছে। কোনো দলকেই তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে দিচ্ছে না। সরকারের সবচাইতে জুলুম-নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে নির্যাতন চালানো হয়েছে। অনেককে গুম করা হয়েছে ও পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে। শত জুলুম বুকে ধারণ করে জামায়াত নিয়মতান্ত্রিকভাবে তার স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের ১৮ মাসে জামায়াত জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার অধিকার আছে। এটা দেশের জনগণের নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার। এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করার এখতিয়ার কারো নেই। গায়ের জোরে বেশি দিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। অতীতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে জনগণের ন্যায় সংগত অধিকার আদায়ের কোনো আন্দোলনকে দমন করা যায়নি। এখনো যাবে না ইনশাআল্লাহ। আমি সকল ষড়যন্ত্র ও জুলুম-নিপীড়ণ বন্ধ করে গ্রেফতারকৃত সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও জনাব হামিদুর রহমান আজাদসহ গ্রেফতারকৃত ১০ জনকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”