সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে শুকনা ছড়ি হতে ৭০০ একর জমিতে বঙ্গবন্ধু সিভিল সার্ভিস একাডেমি করার উদ্যোগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

সিপিবির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম আজ ৬ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিপন্ন এশীয় বন্য হাতিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্য প্রাণীর নিরাপদ বসতি কক্সবাজারের ঝিলংজা বনভূমি। কক্সবাজারের এই বনভূমিতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের যে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার, তা বেআইনি এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের জন্য চরম হুমকিস্বরূপ। আমরা সরকারের এই উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে এই উদ্যোগ বাতিলের দাবি জানাই।

বিবৃতিতে সিপিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ সরকার ঝিলংজা বনভূমিকে ‘রক্ষিত বনভূমি’ বলে ঘোষণা করে। বনবিভাগ এটি রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। ২০০১ সালে দেশের বনভূমির যে তালিকা করা হয়, তাতেও ঝিলংজা মৌজা বনভূমি হিসেবে আছে। বরাদ্দ দেয়া জমির ৪০০ একর পাহাড় ও ৩০০ একর ছড়া বা ঝরনা। সেখানে অনেক দুর্লভ প্রজাতিসহ ৫৮ প্রজাতির বৃক্ষ আছে। এ ছাড়া বন্য প্রাণীর মধ্যে আছে এশীয় বন্য হাতি, বানর, বন্য শূকর, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ও পাখি। এ কারণে বন বিভাগ থেকে ‘এই ভূমি বন্দোবস্তযোগ্য নয়’ উল্লেখ করে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু বন বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে বন বিভাগের আওতাধীন এই জমিকে ভূমি মন্ত্রণালয় বেআইনিভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে ইজারা দিয়েছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ওই এলাকা প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন বনভূমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা নিষেধ। রক্ষিত বন ও প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকাকে স্থাপনা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া অবৈধ। কিন্তু ইজারা দেয়ার উদ্দেশ্যে দেশের অন্যতম জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ এই বনভূমিকে অকৃষি খাসজমি হিসেবে দেখানো হয়েছে। বরাদ্দ দেয়া জমির বাজারমূল্য ৪ হাজার ৮০০ কোটি হলেও, দাম ধরা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সরকার উন্নয়নের নামে পাহাড়, বনভূমি উজাড় করে দিচ্ছে। বনভূমি রক্ষার বদলে, স্থাপনা নির্মাণের জন্য বনভূমি ইজারা দেয়া হচ্ছে। এভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজেরর প্রাকৃতিক পরিবেশকে বিপন্ন করে তোলা হয়েছে। উন্নয়নের নামে পরিবেশ, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না।