নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন পাহাড়ে সেনা-বিজিবির সাথে সন্ত্রাসী জেএসএস’র ব্যাপক গুলি বিনিময়

প্রকাশ: ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১১:৫১ , আপডেট: ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১২:২২

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


টহলরত বিজিবি সদস্য

মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু:

পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে সেনাবাহিনী-বিজিবি’র সাথে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় জেএসএসের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হন। তবে বিজিবি বা সেনা বাহিনীর কোন সদস্য হতাহত  হয়েছে কিনা তৎক্ষণিক জানা যায়নি। এ বিষয়ে  ১১ বিজিবির অধিনায়কের সাথে একাধিকবার ফোন করেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। কেননা তিনি পাহাড়ের নেট বিহীন এলাকায় অভিযানে ছিলেন।
গোলাগুলির ঘটনাটি শুরু হয় বুধবার সকালে উপজেলা সদরের অন্তত ১২ কিলোমিটার পাহাড়ি ও দূর্গম বাঁকখালী নদীর কামিখালের চাকপাড়া ও ত্রিপুরা পাড়া এলাকায়।
আর শেষ হয় দুপুরে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
১ সেপ্টেম্বর রাতে নাইক্ষ্যংছড়িস্থ ১১ বিজিবি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান,১১ বিজিবি অধিনায়ক লে:কর্নেল শাহ আজিজ আহমেদের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান চলাকালে সকাল পৌনে ১১ টায় নাইক্ষ্যংছড়ি জোনের অধীন  ছাগলখাইয়া বিওপি এলাকার চাকপাড়া এলাকায় জেএসএস (মূল) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সাথে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হয়। উভয় পক্ষের গোলাগুলি ১২ টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। গোলাগুলিতে জেএসএস সন্ত্রাসীদের কতিপয় সদস্য মারাত্মক আহত হয়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও বিজিবি এর যৌথ অভিযানে জেএসএস সন্ত্রাসীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। বর্তমানে উক্ত এলাকায় অভিযান চলমান রয়েছে।

তারা আরো জানান, ভবিষ্যতেও পার্বত্য বান্দরবান জেলায় যে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম কঠোরভাবে দমনের লক্ষ্যে বান্দরবান রিজিয়ন এর তত্ত্বাবধানে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধিসহ এ ধরনের আভিযানিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এদিকে স্থানীয়রা জানান,গত ক’দিন ধরে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের আনাগোনা ও অপহরণ আশংকা দেখা দিলে বিজিবি টহলে নামে বাঁকখালী নদীর ছাগলখাইয়া,লংগদু ও কামিখাল নামক এলাকায়। একপর্যায়ে মঙ্গলবার সকালে বিজিবি খবর পায় সন্ত্রাসীরা কামি এলাকায় উৎপেতে আছে। বিজিবি এ এলাকাটি চর্তুদিকে ঘেরাও করে ফেলে একপর্যায়ে বুধবার ভোরে। সন্ত্রাসীরা পাহাড়ি পথ দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় শুরু হয় গোলাগুলি। এতে তৎক্ষনাৎ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্র জানান,ঘটনায় বেশ ক’জন আহত হয়। এদের সংখ্যা ৫ থেকে ৬ জন।

অপর দিকে অসর্মথিত একটি সূত্র জানান,পাল্টাপাল্টি গোলাগুলিতে আহত এক সন্ত্রাসী মারা যায়। ঘটনা চলাকালে পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

কৃষক ও কাঠুরিয়া বনে কাঠ কাটতে গিয়ে পালিয়ে আসা শফিক, জসিম,ছব্বির আহমদ বলেন, ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার হলেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে বুধবার সকালে। সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনী ও বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। এভাবে অন্তত ৩ ঘন্টা দফায় দফায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও হতাহতের সংখ্যা কেউ বলেন-৬ জন অনেকে আরো বেশী। তবে তারা উপজাতি। তারা শান্তি বাহিনীর সদস্য। এ সব সন্ত্রাসীরা এ নদীর বিস্তৃর্ণ এলাকায় চাদাঁবাজি,অপহরণ সহ নানা অপর্কমে লিপ্ত রয়েছে।

তারা আরো বলেন,ঘটনার শেষের দিকে ছাগলখাইয়া বিওপি ক্যাম্পের হেলিপ্যাডে একাধিকবার হেলিকপ্টার উঠানামা করতে দেখেছেন তারা। এখান থেকে লোকজনকে তাতে তুলতেও দেখেছেন তারা।

তবে ১১ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর মাঈন বলেন,তারা এখন কোন হতাহত বা অন্য কিছু কোনটাই বলতে পারবেন না। কেননা ঘটনাস্থল থেকে কেউ ব্যাটালিয়ন সদরে পৌঁছান নি। ওনারা এসে পৌঁছলেই,মিডিয়া সহ সবাইকে বিস্তারিত জানানো হবে।