মমতাজ উদ্দিন আহমদ, আলীকদম (বান্দরবান):

নির্মাণাধীন আলীকদম-জানালীপাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়কের ৩৭ কিলোমিটারজুড়ে নানান প্রজাতির ফুলের চারা রোপনের মাধ্যমে সড়ক বনায়নের মহাকর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নের পথে এগুছে লামা বন বিভাগ। এ উদ্যোগ পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে ফুলে ফুলে সুশোভিত হবে সড়কটির ৩৭ কিলোমিটার এলাকা। ইতোমধ্যে সড়কটির বাবুপাড়া থেকে কুরুকপাতা এলাকাজুড়ে নানান প্রজাতির ফুলের চারা রোপন সম্পন্ন হয়েছে।

রবিবার বিকেলে মাতামুহুরী রিজার্ভের বনায়ন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শনকালে সড়কের দু’পাশে নান্দনিক চিত্র দেখা গেছে।

পরিদর্শনকালে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এসএম কায়চার ও সহকারি বন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (এসিএফ) গিয়াস উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ডিএফও এসএম কায়চার জানান, মাতামুহুরী রিজার্ভের মধ্য দিয়ে সরকার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ৩৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এন-টুমানের সড়ক নির্মাণ করেছে। সড়ক নির্মাণের সময় বনের কিছু গাছ নষ্ট হয়েছে। এসব রিকুভার করতে লামা বন বিভাগ সিএইচটিডাব্লিউসিএ-এসআইডি-সিএইচটি’র সহযোগিতায় এএনআর বাগান সৃজন করছে। ইতোমধ্যে ৬০০ হেক্টর জমিতে ৩ লক্ষ চারা রোপন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এনআর বনায়নটি ক্ষতিগ্রস্ত বনে বাগান সৃজনকে বুঝানো হয় বলে জানা গেছে।

এসিএফ মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে মাতামুহুরী রেঞ্জে রোপনকৃত চারার মধ্যে রয়েছে চাম্পাফুল, গামার, চিকরাশি, তেলসুর, গর্জন, নীম, চাপালিশ, হাড়গাজা, জারুল, সিভিট, আমলকী, তরিতকি, বহেরা-সহ নানান প্রজাতি।

ডিএফও এবং এসিএফের সাথে আলাপকালে আরো জানা যায়, সড়কটির ৩৭ কিলোমিটারজুড়ে বন বিভাগ ফুলের গাছ রোপনে আগ্রহী। এরমধ্যে চাম্পা, রাধাচুড়া, কৃঞ্চচূড়া, জারুল, চাপরাশি, সোনালো প্রভৃতি ফুল গাছকে তাঁরা প্রাধান্য দিচ্ছেন। তাদের এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে বিএটিবি।

তারা আশাবাদী সড়কের দু’পাশজুড়ে ফুলগাছে সজ্জিত হলে পর্যটক বাড়বে। একইসাথে রিজার্ভটির সড়ককেন্দ্রীক নান্দনিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।

পাশাপাশি বন বিভাগ সড়কের কিছু দূর পর পর চৌকি এবং বসার স্থান নির্মাণ করবে। এরফলে পর্যটক কিংবা স্থানীয়রা বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে এর সৌন্দর্য দর্শন করতে পারবে।

ডিএফও এসএম কায়চার বলেন, মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মাতামুহুরী রেঞ্জের বিস্তৃত বনাঞ্চলে হেলিকপ্টার নিয়ে সীডবল (মাটি এবং বীজের সমন্বয় তৈরী বল) ছিটাবে। এসব উদ্যোগ পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে মাতামুহুরী রিজার্ভের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আবারো ফিরে আসবে বলে তিনি আশাবাদী।