মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:
বিভিন্ন বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করে পরিবার নিয়ে সুখের স্বপ্ন দেখছিল নুর মোহাম্মদ (৪১) নামের অসহায় কৃষক। ফলনও হয়েছিল ভাল। কিন্তু বন্য হাতির তান্ডবে নিমিষেই ধ্বংস হলো অক্লান্ত পরিশ্রমের এক একর জমির ধান চাষ।
এমনই খবর পাওয়া গেছে চকরিয়ার নিকটস্থ লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বড়ছনখোলা এলাকায়।
ভুক্তভোগী কৃষক নুর মোহাম্মদ বলেন, চলতি মৌসুমে তিনি লামা উপজেলাধীন ২৮৬নং ফাঁসিয়াখালী মৌজায় এক একর প্রথম শ্রেনির জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করি। অর্থ সংকটে থাকায় বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে মালিক থেকে চড়া দামে জমি বর্গা নিতে হলো। পরে উন্নত ফলনের জন্য ১৭নং ধানের প্রতি কেজি ১৫০ টাকা দামের ১৫ কেজি বীজের চারা জমিতে বপন করি।
হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমে যত্ন করতে থাকলাম। জমির আগাছা মুক্ত ও যথাসময়ে সার, বিষ প্রয়োগে ভাম্পার ফলনও হয়েছিল। কিন্তু গত ২৫ আগস্ট ২০২১ইং তারিখে বন্য হাতির একটি পাল আমার সমস্ত ধানক্ষেত মাড়িয়ে ধ্বংস করে ফেলে। এতে আমার পঁয়তাল্লিশ হাজারের অধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আমি এখন নিরূপায় হয়ে এনজিওর ঋণ পরিশোধ, সন্তান-সন্ততির পড়ালেখার খরচ, সংসারে ভরণপোষণের চিন্তায় মানসিক বিপর্যস্ত অবস্থায় দিনযাপন করছি। আমি নিরুপায় হয়ে এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছি।
এ ব্যাপারে এলিফেন্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) এর সদস্য মোঃ ফরিদুল আলম ঘটনার সত্যতা জানান। তিনি বলেন সম্প্রতি এই এলাকায় বন্য হাতির তান্ডব বাড়ছে। প্রতিনিয়ত আমাদের হাতি তাড়াতে হচ্ছে। কারো বসতবাড়ি বা ক্ষেতখামারে বন্য হাতি অবস্থানের খবর পেলেই আমরা দ্রুত গিয়ে হাতিগুলোকে বনে ফিরে যেতে সহযোগিতা করি। কিন্তু লোকচক্ষুর অন্তরালে ক্ষয়ক্ষতি করলে আমরা বিষয়গুলো পরেই জানতে পারি। গত ২৫ তারিখে তেমনিভাবে নুর মোহাম্মদের এক একর পরিমান জমির চাষাবাদ একেবারে নষ্ট করে দিয়েছে।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকের হোসাইন মজুমদার বলেন, বড়ছনখোলা ও তার আশপাশের এলাকায় প্রায় সময় বন্য হাতির মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়। এ বিষয়টিও আমি শুনেছি। বন বিভাগের মাধ্যমে ভুক্তভোগী কৃষকের ক্ষতিপূরণে সহযোগিতা করবেন বলেও তিনি আশ্বস্ত করেন।