ইমরান আল মাহমুদ, উখিয়া:
“আঁরারে নাগরিকত্ব দিলে বার্মা যাইয়ুমগই। আঁরার ঘরবাড়ি, চলাফিরার স্বাধীনতা দিলে রাজি। বাংলাদেশ সরকারর প্রধানমন্ত্রীর হাছে হাজার হাজার শুকরিয়া আঁরারে বাংলাদেশত আশ্রয় দিয়েদে এতল্লা। আঁরা পরর দেশত মিছিল মিটিং নগরিয়ম। বার্মার নাগরিকত্ব দিলে নয়বো,যিয়ান চায় ইয়ান দিয়া পরিবো” রোহিঙ্গা ভাষায় জানাচ্ছিলেন কুতুপালং ৫নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেডমাঝি হাফেজ মোহাম্মদ হারুন।

দ্বিতীয় দফায় বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা ২০১৭সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ সরকারের মানবিকতায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে ঠাঁই হয় ১২লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের।

এদিকে মানবতার খাতিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা দিন দিন হিংস্র হয়ে উঠছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে।

সম্প্রতি ক্যাম্প ছেড়ে যাওয়ার সময় রামুতে ৪৭৫ রোহিঙ্গা আটক হয়েছে। কঠোর লকডাউনের সময় রামুর বিভিন্ন পয়েন্টে তলল্গাশি চৌকি বসানো হয়। সেখানে প্রায় প্রতিদিনই রোহিঙ্গা আটক হয়। জরিমানা করে তাদের আবারও টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

২০২১সালের ২৫ আগস্ট চার বছর পূর্ণ হয় রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার। আশ্রিত রোহিঙ্গারা প্রথমদিকে তেমন উশৃংখল না হলেও ধীরে ধীরে গড়ে তুলে অপরাধের স্বর্গরাজ্য। মাদক,গুম,খুন,অপহরণ সহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে রোহিঙ্গাদের বিশাল একটা অংশ। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার ৪বছর পূর্ণের দিন ছিলোনা কোনো সভা সমাবেশ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিলো স্বাভাবিক।

এ বিষয়ে ৮এপিবিএন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আশফাকুজ্জামান জানান,রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়ার ৪বছর পূর্তিতে কোনোরকম সভা সমাবেশ না করার জন্য ক্যাম্প ইনচার্জ, বিভিন্ন ক্যাম্পের মাঝি সহ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২৫ আগস্ট উখিয়ার ১১টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে ৮ এপিবিএন সদস্যরা কঠোর অবস্থানে ছিলো বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।