আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপকূলের জেলেদের জালে ধরা পড়তে শুরু করেছে রুপালী ইলিশ। করোনাকালীন অভাবের মাঝে ইলিশের দেখা পাওয়ায় জেলে এবং মৎস্য ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। মৎস্য বিভাগ বলছে,সামনের দিনে আরও বেশি করে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়বে,এতে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন তারা।
নিয়ম অনুযায়ী আরও দুই মাস আগেই শুরু হয়েছিল ইলিশের মৌসুম। কিন্তু জেলেদের জালে ধরা পড়ছিল না কোনো ইলিশ। ক্ষতির মুখে পড়েছিল জেলেরা। হতাশা বাসা বেঁধেছিল তাদের মাঝে। দেরিতে হলেও গত দুই তিন দিন ধরে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে তাদের।
জেলেরা জানিয়েছেন,গত কয়েক মাস নৌকা নিয়ে সাগরে নেমে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হতো তাদের। নৌকার জ¦ালানি ও জেলেদের খাওয়ার খরচের টাকায় উঠতো না। মহাজনের পাওনা আর সমিতির ধার দেনা কিস্তি পরিশোধ করতে পারছিল না তারা। এখন কিছুটা হলেও ইলিশ পাওয়ায় করোনাকালীন এ অভাবের মাঝে জেলেরা সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতে পারছেন। আগামীতে যদি এভাবে ইলিশ পাওয়া অব্যাহত থাকে তাহলে জেলে এবং ব্যবসায়ীরা বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করছেন।
উপজেলা মৎস্য দপ্তর সূত্র জানায়,উপজেলার পারকি থেকে জুঁইদÐী পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকার ১২-১৫টি স্থানে ৬৬৪টি তালিকাভুক্ত নৌকা দিয়ে মাছ ধরেন জেলেরা। এর বাইরে আরও অন্তত পাঁচ শতাধিক নৌকা আছে যেগুলো সাগর থেকে মাছ আহরণ করে। উপজেলায় ৩ হাজার ৫৮৯ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন।
ফকিরহাটের আড়ৎদার মোহাম্মদ আলী জানান,গত কয়েক দিন ধরে উপকূলের অদূরে টং জালে ছোট ও মাঝারি আকারের ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে গভীর সমুদ্রের ভাসান জালের ট্রলারগুলো এখনো উপকূলে ফিরেনি। পূর্ণিমার জো হিসেবে তারাও হয়ত বেশি ইলিশ পেতে পারেন।
উঠান মাঝি ঘাটের বহরদার জসিম উদ্দিন বলেন,আগে নৌকা নিয়ে সাগরে গেলে ইলিশ ধরা পড়ত না,তখন শুধু দেনা করতাম। এখন কিছু কিছু ইলিশ ধরা পড়ছে,খরচপাতি যাওয়ার পরে কিছু টাকা থাকে।
জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.রাশিদুল হক বলেন,মৌসুমের শুরুর দিকে জেলেদের জালে আশানুরূপ তেমন ইলিশ ধরা পড়েনি। ভাদ্র মাসের শুরু থেকে ইলিশ ধরা পড়ছে,তবে আকারে ছোট। জোয়ের দিনক্ষণ মিলিয়ে সামনের দিনে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।