সিবিএন ডেস্ক:তালেবানের কাছে মাথা নত করবেন না আফগানিস্তানের একেবারে শেষ প্রান্তের প্রদেশ পাঞ্জশিরের সিংহের অনুসারীরা। তালেবানের আত্মসমর্পণের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে এই বিদ্রোহীরা বলছেন, তালেবানের সঙ্গে পূর্ণ যুদ্ধের জন্য তারা প্রস্তুত।

পাঞ্জশির নদীর নামে এই উপত্যকার যোদ্ধাদের আগের আমলেও পরাজিত করতে পারেনি তালেবান। কাবুলের মাত্র ৬৫ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে হিন্দুকুশ পর্বতমালায় অবস্থিত এই উপত্যকা ভূ-অবস্থানগত কারণেই অনেকটা বিপদ শংকুল।

পাঞ্জশিরে তালেবান বিরোধী অন্যতম বিদ্রোহী আহমাদ মাসউদ বলেন, তালেবানের কাছে পাঞ্জশির হস্তান্তর করা হবে না। তারা এই এলাকা দখল করতে চাইলে আমাদের বাহিনী তাদেরকে প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত।

আহমেদ মাসউদের বাবা শাহ আহমদ মাসউদের নেতৃত্বে পাঞ্জশিরের যোদ্ধারা আশির দশকে সোভিয়েত বাহিনী, এরপর নব্বই দশকে তালেবানকে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন। কমিউনিস্টবিরোধী যুদ্ধে অসমসাহসিকতার জন্য তাকে ‘পানশিরের সিংহ’ নামে ডাকা হয়। আফগানদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবেও তার নাম উচ্চারিত হয়।

আশির দশকে সোভিয়েত বিরোধী যুদ্ধে কমান্ডার আহমদ শাহ মাসউদ।

আশির দশকে সোভিয়েত বিরোধী যুদ্ধে কমান্ডার আহমদ শাহ মাসউদ।

সম্প্রতি তালেবান রাজধানীসহ অধিকাংশ আফগান এলাকা দখলে নেওয়ার পর এই উপত্যকায় বসে বিদ্রোহের ঘোষণা দিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত আফগান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ। তার সঙ্গে আছেন গনি সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মদী ও আফগানিস্তানের প্রয়াত মোজাহিদীন কমান্ডার শাহ আহমদ মাসউদের ছেলে আহমদ মাসউদ।

বিদ্রোহীরা তালেবানকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের দাবি জানাচ্ছেন। সেই সরকারে তাদের জায়গা দিতে আহ্বান জানাচ্ছেন।

কিন্তু তালেবান বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছে। ৪ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছে কাবুলজয়ীরা।

 

বিদ্রোহী নেতা আহমদ মাসউদ আল আরাবিয়া নিউজকে বলেন, আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নকে মোকাবেলা করেছি, তালেবানকেও মোকাবেলা করতে সক্ষম হব। তালেবান পাঞ্জশির দখল করতে চাইলে যুদ্ধ অনিবার্য।

 

তবে এই বিদ্রোহী নেতা এটাও বলেছেন যে, তালেবান যদি আফগানিস্তানে শান্তি এবং নিরাপত্তার শর্ত পূরণ করতে পারে তাহলে তিনি তার বাবাকে হত্যার জন্য তালেবানকে ক্ষমা করে দেবেন।

 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলছে, তালেবান এখন আগের যে কোনো সময়ের চাইতে অনেক বেশি শক্তিশালী। তারা দখলে নিয়েছে আমেরিকার ফেলা যাওয়া হাজার কোটি ডলার মূল্যের সব অত্যাধুনিক অস্ত্র। ফলে তালেবানের বিপুল শক্তির কাছে পাঞ্জশিরের বিদ্রোহীরা থমকে যেতে পারেন।