মোঃ আরাফাত সানী, টেকনাফ:
কক্সবাজার সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের সদর ইউনিয়ন ডেইল পাড়া ইয়াবারার স্বর্গেরাজ্যে পরিনত হয়েছে। প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা, আইস, স্বর্ণ ও নগদ টাকাসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধারাবাহিকভাবে আটক হচ্ছে। তবু থামছেনা মাদক কারবার।

গত কয়েক সপ্তাহে শুধু ডেইল পাড়ায় ১৫ জন মতো নারী-পুরুষ ইয়াবা কারবারি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, টেকনাফ সদরের ডেইল পাড়া অধিকাংশ স্থানীয় বাসিন্দারা জমির অধিক মূল্য পেয়ে ইয়াবা পাচারকারীদের নিকট বিক্রি করে অনেকেই অন্য জায়গায় চলে গেছেন ঐ স্থানে মিয়ানমারের অবৈধ রোহিঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাদক কারবারি এসে বসতি স্থাপন করে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানে ইয়াবা ব্যবসা ছাড়া ও হুন্ডি ব্যবস্যা চলছে। এ হুন্ডি ব্যবসায়িদের মধ্যে বেশিরভাগই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক। এই রোহিঙ্গারা মাদক বিক্রির টাকা, মিয়ানমারের থেকে শাহপরীর দ্বীপে করিডোর দিয়ে আসা গবাদিপশুর বিক্রির টাকা ও সীমান্ত বানিজ্যের অধিকাংশ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে মিয়ানমারে পাঠানো হয়।

এদের মূল গডফাদার হচ্ছেন পুরাতন রোহিঙ্গা মোহাম্মদ ইলিয়াস। সে প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকা মিয়ানমারে হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন করে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গবাদিপশু ব্যবসায়ীরা জানান। তার এ হুন্ডি ব্যবসা আড়াল করার জন্য মাঝে মধ্যে মিয়ানমার হয়ে শাহপরীর করিডোরের মাধ্যমে গবাদিপশু এনে বাজারে বিক্রি করে।

স্থানীয়রা জানান, সে বেশিরভাগই আড়ালে অবডালে হুন্ডি ব্যবস্যা চালিয়ে আসলেও কিন্তু অনেক সময় টেকনাফ পৌর সভার ৫ নং ওয়ার্ডের টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ সংলগ্ন পূর্ব পাশে ইউনুছ হাজী মার্কেটের সর্বশেষ দক্ষিণ পাশে শাহপরীর দ্বীপের এক মৌলবীর মুদির দোকানে হুন্ডির লেনদেন করে বলে গবাদিপশু ব্যবসায়ীরা জানান। তার মাধ্যমে এই অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তাকে আটক করা হলে এই অপরাধ জগতের অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে এলাকাবাসী জানায়।

তার অর্থায়ন ও সহযোগীতায় অনেক মাদক কারবারি দেশের বিভিন্ন স্থানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে বলে জানাযায়,এর মধ্যে রয়েছে গত (৮ জুন) ২০২১ ইং র‌্যাব-১৫ এর হাতে ৫৭ ভবি স্বর্ণ, ৩২ হাজার পিস ইয়াবা ও নগদ ৪ লক্ষ টাকা নিয়ে নুরুল আমিন কে আটক করেছে। (৮ আগষ্ট) ২০২১ টেকনাফ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ ভরি স্বর্ণ, ৩২ হাজার পিস ইয়াবা ও নগদ ২৫ হাজার টাকা সহ ডেইল পাড়ার হামিদা খাতুন ও তার স্বামী মোঃ হোসেনকে আটক করে। (৯ আগষ্ট) র‌্যাব-১৫ অভিযান চালিয়ে ৮ হাজার ইয়াবা সহ জালাল আহমদকে আটক করেন। (৯ জানুয়ারী) টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাছের জালে লুকায়িত অবস্থায় ৪০ হাজার ইয়াবা সহ হাসন কে আটক করে। (৭ জুলাই) র‌্যাব-১৫ অভিযান চালিয়ে ২০ হাজার ইয়াবা সহ সাইফুল ইসলামকে আটক করে। (১১ জুলাই) র‌্যাব-৭ অভিযান চালিয়ে ৪ হাজার ৪’শ ২৫ ইয়াবাসহ চট্টগ্রামে হাবিবকে আটক করে। এ ধরনের আরো আটককৃত ইয়াবা পাচারকারীদের তথ্য রয়েছে। তার মধ্যে র‌্যাবের হাতে আটক নুরুল আলমে দুই ছেলে পুরাতন রোহিঙ্গা মোহাম্মদ শফিক ও মনজুর আলম, শফিক, বাদশা, শহিদুল্লাহ ড্রাইভার, রশিত, ইদ্রিস, ফারুক, সাইফুল, খেলোয়াড় রহমত উল্লাহ সহ আরো অনেকেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিপিপি র‌্যাব-১৫ টেকনাফের দায়িত্বরত ইনচার্জ লেঃ কমান্ডার মাহাববুর রহমান চৌধুরী জানান, মাদক কারবারিরা এতবড় শক্তিশালি হোক না কেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমাদের র‌্যার বাহিনী অভিযান চালাবেন।