চট্টগ্রাম প্রতিদিন:

দেশে মাদক বেচাকেনায় জড়িত শীর্ষ পর্যায়ের অর্ধশতাধিক ‘গডফাদারের’ তালিকা তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব ‘গডফাদার’কে আইনের আওতায় আনতে পারলে মাদক সাম্রাজ্যের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

রুটিন কাজ হিসেবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সারা দেশের মাদক কারবারিদের তালিকা তৈরি করে থাকে। ওই তালিকা কয়েক মাস পর পর নবায়ন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়। কেউ গ্রেপ্তার হলে, মারা গেলে বা মাদক কারবার ছেড়ে দিলে তার নাম বাদ দেওয়া হয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে তালিকাভুক্ত মাদক কারবারিদের মধ্যে অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে এখনও অনেক শীর্ষ ও মধ্যম সারির কারবারি সারা দেশের কয়েক লাখ খুচরা মাদক কারবারিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এরা দেশ ও বিদেশে আত্মগোপনে থেকে মাদক ছড়িয়ে দিচ্ছে দেশজুড়ে।

র‌্যাব ও পুলিশের গোয়েন্দা সূত্রমতে, ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চার শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪৬ জনই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৈরি করা শীর্ষ পর্যায়ের অর্ধশতাধিক ‘গডফাদারের’ তালিকায় নাম উঠে এসেছে চট্টগ্রামের আজিজুল হক ওরফে জুলাইক্যা ও আমজু, কক্সবাজারের শাহজাহান  ও রশিদ আনছারী, খাগড়াছড়ির তপন দে ও সাজু আহমেদ, রাঙামাটির বাদশা আলম ও মঞ্জুরা বেগম, বান্দরবানের ওয়েমং মারমা ও মিদু অং মারমার।

ওই তালিকায় আরও রয়েছে যাদের নাম, তারা হলেন— ঢাকার বংশালের নাছির উদ্দিন, উত্তরার ফজলুল করিম, বাড্ডার রিয়াদউল্লাহ, ভাটারার ছাব্বির হোসেন ওরফে সোনা মিয়া, আনোয়ারা ওরফে আনু, আসমা আহম্মেদ ডালিয়া ও রবিউল ইসলাম দম্পতি, ওয়ারীর কামাল হোসেন, যাত্রাবাড়ীর মোবারক হোসেন বাবু, কলাবাগানের শামীম আহম্মেদ পাখানী, শামসুর রহমান পাখানী, ফারজানা ইসলাম স্বপ্না, গেণ্ডারিয়ার রহিমা বেগম, মুগদার পারভীন, উত্তর মাণ্ডার শফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ মাণ্ডার আলম, ডেমরার রাজু আহমেদ, মতিঝিলের লিটন, চকবাজারের দুই ভাই ওমর ফারুক, সুমন, লাল মিয়া, কলাবাগানের নাজমুস সাকিব, কামরাঙ্গীর চরের খুরশিদা ওরফে খুশী ও কামাল হোসেন এবং শামীম।

এছাড়া রয়েছেন গাজীপুরের আরিফ সরকার ও মহসিন মিয়া ওরফে ইকবাল হোসেন খান, নারায়ণগঞ্জের রাসেল ও রনি কাজী, মুন্সীগঞ্জের রিপন শেখ ও আমেনা বেগম, নরসিংদীর হানিফ ও রবিউল ইসলাম রবি, টাঙ্গাইলের রাসেল ও সুচরিতা, রাজবাড়ীর বৃষ্টি আক্তার ও আলমগীর বেপারী, মানিকগঞ্জের আরজু ও পাখি মিয়া, শরীয়তপুরের লোকমান বেপারী ও জহির, মাদারীপুরের বাবুল সরদার ও রেজাউল হাওলাদার, কিশোরগঞ্জের সুমি ও রুবেল মিয়া, গোপালগঞ্জের সোনা মিয়া ও লাল চান ফকির, ফরিদপুরের প্রিন্স মাহমুদ ও দক্ষিণ চর কমলাপুরের লিয়াকত শিকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রহিম মিয়া ও মোবারক আলী, চাঁদপুরের হাবিব মোল্লা ও সোহেল ওরফে কাটলি সোহেল, কুমিল্লার নুরুল হক ও রবিন, লক্ষ্মীপুরের আলি হোসেন ও মনির হোসেন, নোয়াখালীর নুর আলম রাজু ও নিজাম উদ্দিন, ফেনীর রসুল আহম্মদ বলী ও রায়হান উদ্দিন আহম্মদ ওরফে রিয়াদ।

তালিকায় নাম রয়েছে— রাজশাহীর বজলুর করিম ওরফে বজলু ও মিন্টু, বগুড়ার টোকেন ও শান্ত মিয়া, পাবনার কালা সাদ্দাম ও রমজান, জয়পুরহাটের ফারুক হোসেন ও জমির উদ্দিন, সিরাজগঞ্জের শরীফ ও আলী আশরাফ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের টিপু সুলতান ও হোসেন আলী, নওগাঁর মিঠু ও শ্রী সুজন, নাটোরের মাসুম ও তৌহিদুল ইসলাম ডলার, খুলনার মমিন গাজী ও টেরা খোকন, বাগেরহাটের সেকান্দার ও খোকন, চুয়াডাঙ্গার তানজিল ও আমজাদ, যশোরের আমির হোসেন ও লোকমান হোসেন, ঝিনাইদহের শহীদুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার রাজু আহম্মেদ ও সাজ্জাদ হোসেন, মাগুরার নজরুল ইসলাম বুধো ও শাহিনুল, মেহেরপুরের আজিজুল ইসলাম ও আবদুল কাশেম, নড়াইলের বাদশা মোল্লা ও ফিরোজ শেখ, সাতক্ষীরার নজরুল ইসলাম ওরফে বরনু ও আজিজুল ইসলাম, রংপুরের টিপু সুলতান ও পারভীন, দিনাজপুরের শাহজালাল ও মোমিনুর, গাইবান্ধার শাহানুল ইসলাম শাওন ও সুজন চৌধুরীর।

এছাড়া আরও রয়েছেন— কুড়িগ্রামের আনিস ওরফে আনাস ও মানিক চন্দ্র, লালমনিরহাটের রবিউল ইসলাম ও মমী বেগম, নীলফামারীর একরামুল ও নাদিম, পঞ্চগড়ের হাবুল ওরফে হাবলু ও সুমন বাঁশফোড়, ঠাকুরগাঁওয়ের কলাডাঙ্গীর জহিরুল ইসলাম ও শিতলপুরের জহিরুল ইসলাম, সিলেটের আনোয়ার হোসেন ও আনোয়ার মিয়া, হবিগঞ্জের জসিম উদ্দিন ও রশিদ মিয়া, সুনামগঞ্জের শামছুল হক ও মামুনুর রশিদ, মৌলভীবাজারের শামীম মিয়া ও ইসমত মিয়া, বরিশালের বাবুল হোসেন ও সোহেল আবদুল্লাহ, বরগুনার রশিদ মৃধা ও আফজাল হোসেন, ভোলার মুন্না ও নিলয়, ঝালকাঠির স্বপন ও রাজ্জাক, পটুয়াখালীর শাইন খান ও সাইফুল খান, পিরোজপুরের আবির শেখ প্রিন্স ও বাপ্পি শেখ, ময়মনসিংহের মজিবর ও শাওন, জামালপুরের আশরাফুল ইসলাম নাহিদ (রকি) ও আয়াত আলী, নেত্রকোনার সেলিম মিয়া ও রুমন খান পাঠান এবং শেরপুরের শেখ ফরিদ ও আবদুল মোতালেব।