এম.এ আজিজ রাসেল:
অবশেষে আগামী ১৯ আগস্ট থেকে খোলা হচ্ছে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র। তবে পর্যটনকেন্দ্র, হোটেল—মোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র আসন সংখ্যা শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহার করে চালু করতে পারবে। নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে দীর্ঘদিন পর পর্যটন সেক্টর কেন্দ্র খুলে দেওয়ায় স্বস্তি বিরাজ করছে কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মাঝে।

বৃহস্পতিবার বিকালে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, দেশ—বিদেশী পর্যটকে সরগরম থাকা সৈকতে সুনসান নিরবতা। অনেকেই বদ্ধ ঘর থেকে বের হয়ে সৈকতে আসলেও হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। সৈকতে দায়িত্বরত বীচ কর্মীরা এখনো সৈকতে কাউকে নামতে দিচ্ছে না। ১৯ আগষ্টের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৈকতে আসার জন্য ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে মাইকে।

পর্যটন খুলে দেওয়ার খবরে দীর্ঘদিন কষ্টে দিনাতিপাত করা হোটেল—মোটেল ও গেষ্ট হাউস কর্মকর্তা—কর্মচারিরাও উচ্ছ্বসিত। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে হোটেল—মোটেল গুলোকে সাজানো হচ্ছে নবরূপে। ধোয়া—মুছার কাজ চলছে সর্বত্র। দফায় দফায় বন্ধ রাখা হয়েছে পর্যটন সেক্টর। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসায়ীরা। তবে এবার তাঁরা ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন বুনছে।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ কলিম জানান, হোটেল ব্যবসা নির্ভর কক্সবাজারে ২৫ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। আংশিকভাবে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ায় সবার মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে। নতুনভাবে পথচলা শুরু করবে হোটেল—মোটেল কর্মকর্তা—কর্মচারিরা।

ওয়েলকাম প্রপার্টিজ ও সী ওয়েলকাম রিসোর্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বদরুল হাসান মিলকী ও কলাতলী গ্র্যান্ড স্যান্ডি হোটেলের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, করোনার কারণে গত বছর পাঁচ মাস বন্ধ ছিল রিসোর্ট। এ বছরও চার মাস বন্ধ। গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার সুযোগ না পেতেই আবার চলতি লকডাউনে আমাদের ক্ষতি পাহাড় সমান। ক্ষতি পোষাতে না পেরে কর্মচারীদের ছাঁটাই করতে হয়েছে। আশা করছি এবার সেই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবো।

কক্সবাজার হোটেল—মোটেল, গেষ্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ আবুল কাসেম সিকদার বলেন, দীর্ঘদিন লকডাউন থাকায় পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন পর্যটন এলাকার হোটেল ব্যবসায়ীদের। গত চার মাসে তাদের অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে পর্যটন খুলে দেওয়ার সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নে সবাইকে কাজ করতে হবে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ জানান, করোনায় একের পর এক লকডাউনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন শিল্প। এই শিল্পের সাথে জড়িত হোটেল—মোটেল গেষ্ট হাউসের কর্মকর্তা—কর্মচারিরা কর্ম হারিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছে। তাই দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। কক্সবাজারের সন্তান স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তাদের জন্য ৪০ লক্ষ টাকা প্রধানমন্ত্রী বিশেষ অনুদান দিয়েছেন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এই বিশেষ অনুদান বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যেসব হোটেল—মোটেল সরকারি নির্দেশনা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।