শাহীন মাহমুদ রাসেল:

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে একটু সহযোগিতার জন্য সবার দিকে তাকিয়ে আছে কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া কোনারপাড়া গ্রামের এতিম দিনমজুর মোহাম্মদ মুবিন।

মুবিনের জীবন প্রদীপ এখন নিভু নিভু। পৃথিবী জয়ের অদম্য ইচ্ছেয় অসহায় মা-বোনের মুখে অন্ন যোগাতে কাজে ফেরার দৃঢ় প্রত্যয়ী এই স্বপ্নবালক প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন চারিদিকে ভাঙ্গাচুড়া বাঁশের বেড়া ও স্যাঁতস্যাঁতে মাটিতে থাকা নিজ বাড়িতে। জীবন সংগ্রামী মুবিনের লিভার জন্ডিসে দু’টি কিডনিসহ লিভার অচল হয়ে গেছে।

চিকিৎসকের মতে, জরুরী ভিত্তিতে ঢাকা-চট্রগ্রাম গিয়ে চিকিৎসা করা না হলে যে কোনো সময় নিভে যেতে পারে মুবিনের সম্ভাবনায় সুন্দর জীবনপ্রদীপ। ধূসর হয়ে যেতে পারে তার স্বপ্ন, সাধ এবং ভালোবাসা; মুছে যেতে পারে চিরচেনা প্রিয়মুখ ‘মুবিন’।

মুবিনের বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের খরুলিয়া কোনারপাড়া গ্রামে। তিন বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে সে দ্বিতীয়। রিক্সাচালক বাবা আবুল কালাম বেঁচে নেই, বড় ভাই রুবেল খাবার হোটেলের কর্মচারী, লকডাউনে তিনিও প্রায় বেকার। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনোমতে টেনেঠুনে সংসার চালাচ্ছেন।

স্থানীয় বাজারে এবং অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে নিজের ছোট ভাই-বোনের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারে সমর্থন যুগিয়ে তাদের আগামীর পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল মুবিন। হঠাৎ করে সবকিছু কেমন যেন ওলোট-পালোট করে দেয় ‘লিভার জন্ডিস’ নামক ব্যাধি। থমকে যায় সে; ফিকে হতে শুরু করে তার অপার সম্ভাবনাময় পথচলার। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. মোস্তফা নূর মহসীন, ডা. ইয়াসিন আরাফাত, বাতজ্বর বিশেষজ্ঞ ডা. আশীষ দে ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অনুপম বড়ুয়ার তত্ত্বাবধানে দীর্ঘদিন কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্লিনিক এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সহায়-সম্বল যা ছিলো সব শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। বর্তমানে অর্থের অভাবে বাড়ীতে পড়ে আছেন সপ্তাহ দুয়েক ধরে।

তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা-চট্রগ্রাম নিয়ে যেতে পারছেন না তার মা। সেখানে চিকিৎসকদের পরামর্শে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশা প্রকাশও করেছেন তিনি।

লকডাউনে ঢাকা-শহরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা কারানোর টাকা তাঁর হতদরিদ্র মায়ের পক্ষে যোগাড় করা সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সাহায্যের জন্য সমাজের সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন তার মা লায়লা বেগম। সবাই যদি একটু একটু করে এই হতদরিদ্র দিনমজুরকে সহায়তায় এগিয়ে আসেন তবে হয়তোবা মুবিন ফিরে পেতে পারেন নতুন জীবন।

ক্রমাগত ছোট হয়ে আসছে মুবিনের পৃথিবী, কিন্তু বেঁচে থাকার আশাটা বড় বেশী তার। প্রশ্ন থেকে যায়, তবে কী এভাবেই মুকুলেই ঝরে যাবে মুবিন! বিবেকের দায় কি আমাদের নাড়া দেবে না, যদি সে ঝরে যায়! একটু সহানুভূতি একটু ভালোবাসা প্রকাশের অপেক্ষা মাত্র।‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না…।’ এমনি ভরসার বাণী সামনে নিয়ে অন্ধকারে নিভতে যাওয়া মুবিন নামক প্রদীপকে আলোকিত করে তুলতে সবার সাহায্য একান্ত প্রয়োজন। তাই আসুন, মুবিনের পাশে দাঁড়াই, এগিয়ে দেই সহযোগিতার হাত। বেঁচে উঠুক সে, স্বপ্নীল আকাশে অহর্নিশ ডানা মেলে উড়ুক তার রঙিন দিনগুলি।

সাহায্য সরাসরি পৌঁছে দিতে মুবিনের মায়ের মোবাইল নম্বরটিতে একটি বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়েছে। বিকাশ নম্বর 01643-823062 এছাড়া যোগাযোগ করতে পারেন স্থানীয় সংবাদকর্মী শাহীন মাহমুদ রাসেল-01819991299 এ নম্বরে।