নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের উখিয়ায় বেলার আইনি নোটিশ উপেক্ষা করে বনভূমিতে স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় বিরাজ করছে উত্তেজনা।

উখিয়ার সোনারপাড়া খেলার মাঠে বনভূমির বিএস ২নং খতিয়ানের জঙ্গল শ্রেণির জমিতে শিক্ষা প্রকৌশলের নাম দিয়ে সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহুতল ভবন নির্মাণ করে আসছিল। স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ ও বনভূমি উদ্ধারে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা আইনগত নোটিশ দেয়। কিন্তু সেই নোটিশ উপেক্ষা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সাঈদ আহমদ কবির বলেন, গত ১৮ জুলাই উখিয়ার সোনারপাড়া খোলারমাঠে জঙ্গল শ্রেণির বনভূমির রেকর্ডীয় ৭.০১ একর জমির ১৬৫ দাগের উপর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নাম দিয়ে সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছে এবং বনভূমির জমি সুরক্ষা করে উক্ত বনভূমির নির্ধারিত জমি পুনঃ উদ্ধার করে ভবন নির্মাণ বন্ধ করাসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক উক্ত বনবিভাগের জমির কাঠামোগত অবস্থান ঠিক রেখে পরিবেশগত অবস্থান সমুন্নত রাখতে বেলা আইনগত একটি নোটিশ প্রদান করেন।

নোটিশটি রেজিস্ট্রিকৃত ডাকযোগে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, প্রধান বনসংরক্ষক, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, জেলা প্রশাসক কক্সবাজার, পুলিশ সুপার কক্সবাজার, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ঠিকানায় গত রবিবার ১৮ জুলাই পৌঁছানো হয়। এবং নোটিশ প্রাপ্তির সাতদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসহ অবহিত করার জন্যও বলা হয়েছিল। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে জানানো হয়।

তিনি আরো জানান, এরই মধ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার আইনি নোটিশ উপেক্ষা করে বনবিভাগের জালিয়াপালং মৌজার জঙ্গল শ্রেণির বিএস ২ নং খতিয়ানের ৭.০১ শতক জমির ১৬৫ দাগের উপর ঠিকই বহুতল ভবনের কাজ অব্যাহত রেখেছে। যা খুবই দুঃখজন এবং এ বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, সোনারপাড়া খেলারমাঠে বনবিভাগের জমির উপর সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকটি ভবন স্থিতাবস্থায় দেখা যায়। মাঠের পশ্চিম পাশেও ঠিক বনবিভাগের জমির উপর তিন তলা বিশিষ্ট একটি ভবনের কাজ চলমান।

এলাকাবাসী বলেন, ৩ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে বনবিভাগের জমিতে বেশকিছু শ্রমিক এবং ৬—৭ জন লোকজন নিয়ে খেলারমাঠে স্কুলের শিক্ষক শামশুল আলম ভূলু উপস্থিত হয়ে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এতে এলকাবাসীসহ সচেতন মহলে ব্যাপক মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের প্রধান হুমায়ূন করিব বলেন, সেটি বনবিভাগের বনভূমি। বেলার নোটিশের জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। সেই সাথে লকডাউনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে ওই স্থাপনা উচ্ছেদ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ বলেন, বেলা কার থেকে কি শুনে নোটিশ দিয়ে বসে আছে। বেলা সাধারণত যেসব বিষয় দেখে তার সাথে এটার কোন সম্পর্ক নেই। এখানে নিজেদের বাউন্ডারির ভেতরেই স্কুল নির্মাণ করা হচ্ছে। আর স্কুলের জন্য একটা বিল্ডিং কি করা যায় না?