সিবিএন ডেস্ক:
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৫টায় পার্লামেন্টে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা ও পার্স টুডে এ খবর জানিয়েছে।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শুরুর আগেই ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান, পার্লামেন্টের স্পিকার, এবং সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিদেশি অতিথিরা পার্লামেন্ট ভবনে আসন গ্রহণ করেন।

ইরানের সংবিধানের ১২১ নম্বর অনুচ্ছদ অনুযায়ী নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রায়িসি দেশের জাতীয় পার্লামেন্টে শপথ গ্রহণ করেন। এ অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্যেরা এবং বিচার বিভাগের প্রধান উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও রীতি অনুযায়ী রায়িসির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। এরপর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। কোরআন তেলাওয়াতের পর স্বাগত বক্তব্য দেন স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কলিবফ। তাঁর বক্তব্যের পর বিচার বিভাগের প্রধান গোলামহোসেইন মোহসেনি এজেয়ি বক্তব্য দেন। তাঁর বক্তব্যের শেষে শপথ গ্রহণ করেন প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি।

বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট রায়িসির ফটোসেশনের আগে ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কলিবফ বিদেশি অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান। বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের ৭৩টি দেশের অন্তত ১১৫ জন রাষ্ট্রীয় অতিথি প্রেসিডেন্ট রায়িসির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এসব অতিথির মধ্যে বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান ছাড়াও ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিবসহ নানা পর্যায়ের পদস্থ কর্মকর্তা। বাংলাদেশ থেকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

ইরানের পার্লামেন্ট মজলিসে শুরায়ে ইসলামির মুখপাত্র সাইয়্যেদ নিজামুদ্দিন মুসাভি জানিয়েছেন, ১০ দেশের সরকারপ্রধান, ২০ দেশের পার্লামেন্ট স্পিকার, ১১ জন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ১০ জন অন্যান্য মন্ত্রীর পাশাপাশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের বিশেষ প্রতিনিধিরা রায়িসির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

ইব্রাহিম রায়িসি এমন এক সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন, যখন ইরান যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাসহ বড় কিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

রায়িসি গত মঙ্গলবার এক ভাষণে বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া নিপীড়নমূলক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করানোর চেষ্টা করবেন এবং দেশের অর্থনীতিকে বিদেশিদের মর্জি মতো চলতে দেবেন না।

ইরান ২০১৫ সালে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিনিময়ে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে যে চুক্তি সই করেছিল, সে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে সরে দাঁড়িয়ে ইরানের ওপর সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে।

নতুন চুক্তি করে পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিতকরণে ফেরত আসার বিষয়ে উভয় পক্ষ থেকে পরোক্ষ আলোচনা হয়েছে।