ইমাম খাইর, সিবিএন:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ক্রীড়া সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকীতে চক‌রিয়ায় বিনামূ‌ল্যে গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে।

৫ আগস্ট উপজেলা পরিষদের হলরুম মোহনায় কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফা‌সিয়াখালী রেঞ্জের আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অ‌তি‌থি ছিলেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম।

উপ‌জেলা নির্বাহী অ‌ফিসার (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- উপজেলা পরিষদের চেয়ার‌ম্যান ফজলুল করিম সাঈদী ও পৌরমেয়র আলমগীর চৌধুরী।

এ সময় ফা‌সিয়াখালী রেঞ্জ অফিসার মাজহারুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শেখ কামাল। তিনি বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে।

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ২৬ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সপরিবারে নিহত হন তিনি।

শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত কর্মী ছিলেন। এই সংগঠনের সংগ্রামী, আদর্শবাদী কর্মী হিসেবে ‘৬৯-র গণঅভ্যুত্থান’ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন।

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ঐতিহাসিক বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন।

শেখ কামাল

বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি.এ. অনার্স পাস করেন।

তিনি ছায়ানটের সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে থিয়েটার আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথমসারির সংগঠক ছিলেন।

বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’। শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনয় শিল্পী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।

শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচণ্ড উৎসাহ ছিল তার। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

শেখ কামাল দেশের নান্দনিক ফুটবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য দেশীয় খেলার মানোন্নয়নে অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অপরিসীম অবদান রেখেছিলেন। নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন এবং তাদের সাথে নিয়মিত অনুশীলন করতেন।

১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই খ্যাতিপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সাথে তার বিয়ে হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শাহাদাত বরণের সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এম. এ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।