রাজু দাশ,চকরিয়া:
কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষনে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাড়িসহ আবাদী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাই দিশেহারা হয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে ওই এলাকার মানুষরা।

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,
কয়েকদিনের ভারী বর্ষণেও উজানের পাহাড়ি ঢল
মাতামুহুরি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলে আবাদীজমিসহ বেশ কিছু ঘরবাড়ী তলিয়ে গেছে। নদীর তীরবর্তী মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। নদীর তীরে প্রচন্ড ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফলে তীরবর্তী মানুষজন চরম দূর্ভোগের শিকারে পড়ে। অনেকের আবাদী জমি নদী গর্ভে ভেঙ্গে পরায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এছাড়া প্রতিনিয়তই ভেঙ্গে যাচ্ছে ঘরবাড়ী। চরম ঝুঁকিতে রয়েছে অসংখ্য ঘর বাড়ি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরদারী না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষজন অভিযোগ তুলেছেন।
গৃহহারা পরিবারগুলোর দাবি অতিদ্রুত নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণ এবং তাদের দ্রুত সাহায্য সহযোগিতা কামনা করেন।

চকরিয়া- মহেশখালী সড়কের বাটাখালী ব্রীজের লাগোয়া স্থানীয় লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েকদিনে মাতামুহুরীর নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তীব্র স্রোতের ঘরবাড়ি ভেঙে নদীতে ডুবে যায়। এলাকাবাসীর সহায়তায় কয়েকটি ঘর উদ্ধার হলেও বেশকয়েকটি ঘরে থাকা আসবাবপত্র কিছুই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানান।

পৌরসভা ৯ নং ওয়ার্ডে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা নদী খননের প্রতিশ্রুতি দেয়। নির্বাচন পার হয়ে গেলে সে এসতেহার আর বাস্তবায়িত হয় না। গত বছর কিছু জিও ব্যাগ ফেললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এছাড়া দীর্ঘদিন যাবৎ কোন নদী খনন ও রক্ষা বাধ নির্মান হয়নি। জরুরী ভিত্তিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ড বাটাখালী মাষ্টার পাড়া এলাকায় মাতামুহুরি নদীতে বিলিন হওয়া ঘরের মালিক মোঃ রশিদুল আলম জানান, টানা ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে মাতামুহুরি নদীর গর্ভে মুহূর্তেই আমার ঘর ভেঙে নদীতে তলীয়ে গেছে। এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আমার ঘরে থাকা টাকা কিছু জিনিসপত্র কিছুই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

একই এলাকায় আমেনা বেগম জানান, বর্ষা এলেই আমরা ভাঙন আতঙ্কে থাকি। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে পাহাড়ি পানি নেমে আসতে কিছু বুঝার আগেই ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় আমার ঘর।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরা ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি যেগুলো এলাকায় নদী ভাঙ্গন আছে আমরা এগুলোতে জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঁঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করি বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলতে পারলে নদী ভাঁঙ্গন রোধ হবে এবং মানুষ নদী ভাঁঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পাবে। আমাদের ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।
এছাড়াও নদীগর্ভে ঘরবাড়ী বিলীন হওয়া সহ ওই এলাকার উপজেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে ত্রান বিতরন করা হয়েছে বলে জানান।