-আল রাহাত

যার সর্বসাকুল্যে ৫ হাজার টাকা পুজি সেই পানের দোকান আজ বন্ধ যদিও দোকান ভাড়া বন্ধ নেই। ২০ লক্ষ ঋণে করা ছোট ব্যবসায়ীর মিল আজ বন্ধ যদিও ৫-৭ জন কর্মচারীর বেতন ও মিলের জায়গার ভাড়া বন্ধ নেই। লাখ লাখ টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পরিবহন খাতে বিনিয়োগ করা ব্যবসায়ীর গাড়ির চাকাও আজ বন্ধ, যদিও ঋণের কিস্তি বন্ধ না। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা পর্যটন ব্যবসায়ীদের হোটেল-মোটেল বন্ধ, যদিও মেইন্টেনেন্স খরচ বন্ধ নেই। হাজার শিক্ষকের প্রাইভেট টিওশন-কোচিং, স্কুল কলেজ সব সব বন্ধ। রেস্তোরাঁ বন্ধ, মার্কেট বন্ধ, দোকান পাট বন্ধ শুধু বন্ধ বন্ধ বন্ধ। কারণ লকডাউন চলছে।
কিন্তু হাজার কোটি টাকা টার্নওভার হওয়া শত শত কোটি টাকা লাভ করা গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের গার্মেন্টস বন্ধ করতে গেলেই শুধু লস আর লস। আর অন্য কারো ব্যবসা-চাকুরীতে লকডাউনে যেন কোন লস নেই। তাই লকডাউন যত কঠোর হোক, মানুষ যতই মরুক, যতই তাদের প্রণোদনা দেন না কেন, তারপরও সবার আগে তাদেরই গার্মেন্টস-কারখানা খোলা লাগবেই। বাকিদের সব বন্ধ, শুধু গার্মেন্টস খোলা কারণ শুধু গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদেরই দেশ এই বাংলাদেশ।
তাদের কাছে কিসের সরকার কিসের জনগণ?
দেশের ৮০ ভাগ সম্পদ এখন ২০ ভাগ মানুষের দখলে। আর বাকি ২০ ভাগ সম্পদে বাকি ৮০ ভাগ জনগণ কোন রকমে খেয়ে পরে বেচে আছে। মধ্যম আয়ের দেশ ঠিকই। কিন্তু কার আয়ে সে অর্জন?
শোষনের জন্য কি ব্রিটিশ-পাকিস্তানিদের দরকার আছে? দেশীয় বেনিয়াদের শোষনের এই বাংলাদেশ কি চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু? এটাই কি তবে সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা? যদি তাই হয় তাহলে এটা স্বপ্ন নয় দুঃস্বপ্ন।

লেখক: প্রভাষক , কক্সবাজার সিটি কলেজ ।