মোঃ নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌর সদর এলাকায়। (২৯ জুলাই) বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার সময় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন চালকবিহীন একটি বিশালাকৃতির পাইপ বহনকারী ডাম্ব বার্জ শঙ্খ নদীর উপর নির্মাণাধীন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল সেতু ও মহাসড়কের সেতুতে সজোরে আঘাত হানে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন’র কাজে ব্যবহার করা এ বিশাল বার্জটি বন্যা উপদ্রুত শঙ্খ নদীর তীব্র স্রোতের টানে রশি ছিঁড়ে দ্রুত বেগে ধেয়ে আসতে থাকে। এসময় বার্জটি শঙ্খ নদীর ওপর দিয়ে সঞ্চালনকৃত পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ১১হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তারে সজোরে আঘাত করলে বিকট শব্দে তারটি ছিঁড়ে নদীতে পড়ে যায় এবং পুরো এলাকা বিদ্যুতের ঝলকানিতে আলোকিত হয়ে ওঠে। শঙ্খ নদীতে নির্মাণাধীন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল সেতুটির উভয় দিকে স্প্যান বসানো হলেও মধ্যখানে এখনো কোন স্প্যান বসানো হয়নি। বার্জটি রেল সেতুর স্প্যানের দিকে বেশ কয়েকবার ধেয়ে আসলেও স্রোতের টানে দিক পরিবর্তন করে শেষ পর্যন্ত স্প্যান বিহীন দুটি পিলারে প্রচন্ড শব্দে পর পর কয়েকবার তীব্র বেগে আঘাত হানে। এতে পিলারের ক্ষতিসাধিত হলেও স্প্যানগুলো ভেঙ্গে পড়ে থেকে টানে ভেসে যাওয়া থেকে রক্ষা পায়।
এরপর বার্জটি দু’কূল প্লাবিত শঙ্খ নদীর তীরবর্তী ঘনবসতিপূর্ণ বস্তি এলাকার ঘর-বাড়ীর দিকে বার বার ছুটে আসলেও প্রবল স্রোতের কারণে পিছু হটে দিক হারিয়ে এদিক-সেদিক ছুটতে থাকে। ফলে বার্জটি তীরবর্তী এলাকায় আঘাত হানতে পারেনি। এতে বন্যাপ্লাবিত লোকালয়ের বাড়ী-ঘরে পানিবন্দি অসংখ্য মানুষ ভয়াবহ প্রাণহানি থেকে প্রাণে বেঁচে যান। তৎক্ষণাৎ বার্জটি আবার কক্সবাজার মহাসড়কের দোহাজারীস্থ পুরোনো ব্রিজে বিকট আওয়াজে ধাক্কা দিয়ে আটকে যায়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সপ্তাহকালযাবত বন্যাকবলিত শঙ্খ নদীর তীব্র স্রোত উপেক্ষা করে বিশালাকৃতির এ বার্জটি বেশ ক’দিন আগে একটি ড্রেজিং মেশিনের সাথে অত্যন্ত হাল্কাভাবে বেঁধে দিয়ে এটির সব লোকজন চলে যান। ফলে বন্যার পানির তোড়ে সহজেই বার্জটির বাঁধন ছিঁড়ে যায়।

এব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তমা গ্রুপের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন এ প্রতিবেদকের সাথে অশালীন আচরণ করেন। এ সংক্রান্ত কোন নিউজ দিতে নিষেধ করে বলেন, এতে সাংবাদিকদের কী কাজ।

তবে তমা গ্রুপের ইমার্ডমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার রোকনুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ, বিআইডব্লিউটিএ এবং পল্লী বিদ্যুৎ এর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে ইতোমধ্যে রওয়ানা হয়েছেন।